কক্সবাজারে স্মৃতিময় দিনগুলো

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অনার্সের পাঠ চুকে গেছে আগেই। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ৫টি বছর। নবীন থেকে প্রাক্তনের খাতায় নাম উঠে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষবেলাকে স্মৃতিময় করতে কক্সবাজারে ভ্রমণে যাত্রা। বলছিলাম নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ৯ম ব্যাচের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনার্সের ফাইনাল ট্যুরের কথা।

ট্যুর ঘিরে সবার মধ্যে ছিল উদ্দীপনা। ৩ দিনব্যাপী এই ভ্রমণযাত্রায় গন্তব্য ছিল সুগন্ধা বীচ, লাবণী পয়েন্ট, দরিয়ানগর বীচ,ফিশ ওয়ার্ল্ড,ইনানী বীচ, পাটুয়ারটেক ও হিমছড়ি। ঘোরাঘুরি,ছবি তোলা, খাওয়াদাওয়া, আড্ডা,গানের মধ্য দিয়ে রঙিন সময়গুলো অতিবাহিত হয়।রোদ,বৃষ্টির মাঝে সমুদ্রের নীল জলরাশি ঘিরে প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠে সকলে। ট্যুরের যাত্রা শুরু হয় গত ১২ সেপ্টেম্বর এবং ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীতে ফিরে আসার মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে। ট্যুরে সপরিবারে যুক্ত হয়েছিলেন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.খন্দকার ফাহমিদা সুলতানা ও সহকারী অধ্যাপক ড.অতুন সাহা।

আমাদের ব্যাচের ১৬ জনের এই আনন্দভ্রমণের সঙ্গী ছিল মাহদীন,শান্ত, অংকন, রিফাত, সাকিব, কল্যাণ, কনক, আদর, নাঈম, রাফি, রাজ্জাক, বৃষ্টি, দোলন, ফাবলিহা ও লগন। ১২ সেপ্টেম্বর রাতে নোয়াখালীর সোনাপুর থেকে রাতে আমাদের গাড়ি কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। প্রায় ৬ ঘন্টার জার্নি শেষে আমরা ভোরে কক্সবাজারে পৌছাই। গাড়ি থেকে নেমে আমরা হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা করি। হোটেল ওশেন ভিউতে আগে থেকেই থাকার জন্য রুম বুকিং দিয়ে রাখা হয়েছিল।

হোটেলে প্রবেশের পর আমরা বিশ্রাম নিয়ে  হোটেলের পাশের পউশি বাংলা রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা করি। এরপর আবার হোটেলে ফিরে গিয়ে বিচে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বীচে গিয়ে সকলে উচ্ছ্বাস, আনন্দ নিয়ে সমুদ্রের নীল জলরাশির ঢেউয়ের সাথে নিজেদের সোনালী সময়কে ছবিবন্দী করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সমুদ্রের নীল জলরাশি আমাদের মনকে সতেজ ও প্রাণবন্ত করে তোলে। দুপুরে আমরা হোটেলে ফিরে যাই এবং ফ্রেশ হয়ে আমাদের হোটেলের পাশেই নিউ মেজবান হোটেলে দুপুরের খাবার খাই।

এরপর বিকালে রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ডে যাই। ফিশ ওয়ার্ল্ডে সামুদ্রিক মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণীদের বৈচিত্র‍্য যেন আমাদের সমুদ্রযাত্রাকে ভিন্নতা দেয়। ফিশ ওয়ার্ল্ড থেকে বেরিয়ে আমরা কক্সবাজারের জনপ্রিয় বার্মিজ মার্কেটে যাই। মার্কেট থেকে ঘুরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া ও কেনাকাটা করে বৃষ্টির মধ্যে সুগন্ধা পয়েন্টের কাছেই একটি রেস্টুরেন্টে  রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরে যাই।

এরপর ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে আমরা পউশি বাংলা রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা করি। এরপর আবার হোটেলে ফিরে গিয়ে বিচে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ি। এবার আমরা লাবণী পয়েন্টে যাই। সেখানে যাওয়ার পর শুরু হয় প্রচন্ড বৃষ্টি। সমুদ্রের নীল জলরাশির ঢেউয়ের সাথে বৃষ্টির মিতালী যেন আমাদের মনকে রাঙিয়ে তোলে। বৃষ্টিতে ভিজে আমরা বীচে ফুটবল খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সেখানে দীর্ঘসময় অতিবাহিত করে আমরা হোটেলে ফিরে যাই।

এরপর ফ্রেশ হয়ে নিউ মেজবান হোটেলে দুপুরের খাবার খাই। এরপর আমরা সমুদ্রের সন্ধ্যাকালীন সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দরিয়ানগর বীচে যাই। সেখান থেকে ফিরে যাই সুগন্ধা বীচে।বীচে সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি যেন অন্যরকম অনুভূতি  জাগিয়ে তোলে। সমুদ্রভ্রমণে গিয়ে সামুদ্রিক মাছের স্বাদ নিতে সুগন্ধা বীচের পাশেই রেস্টুরেন্টে ফিশ বার্বিকিউ এর আয়োজন করি।এরপর আমরা আবার বীচে গিয়ে সমুদ্রের উত্তাল জলরাশির সৌন্দর্য্য উপভোগ করি। এরপর হোটেল রুমে ফিরে যাই।

পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর ছিল রৌদ্রজ্জল দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা নতুন হোটেল টেড ওয়াটারে যাই। হোটেলে ব্যাগ রেখে নাস্তা করে চান্দের গাড়িতে করে রওনা দেই আমরা।গন্তব্য ইনানী বীচ,পাটুয়ারটেক ও হিমছড়ি। মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যখন গাড়ি যাচ্ছিল তখন পাহাড় আর সমুদ্রের মিতালি যেন আমাদের হৃদয়কে রাঙিয়ে তোলে।ঘুরাঘুরি, ছবি তোলার মাধ্যমে সমুদ্রের বিশালতার মাঝে নিজেদের স্মৃতিকে ধারণ করি।এরপর বিকালে আমরা ফিরে আসি এবং দুপুরের খাবার সেরে লাবণী বীচে যাই।সেখানে রাতভর আড্ডা,ঘুরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া করে হোটেলে ফিরে আসি।

শেষদিন ১৬ সেপ্টেম্বর আমাদের ফিরে আসার পালা। এদিন সকালে নাস্তা সেরে আমরা হোটেল থেকে বেড়িয়ে যাই। এরপর আমরা বাসে উঠে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে রওনা দিই এবং প্রায় ১১ ঘন্টা জার্নি শেষে রাতে নোয়াখালী ফিরে আসি। স্মৃতিময় দিনগুলোর সমাপ্তি ঘটে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * কক্সবাজার * স্মৃতিময় দিন
সর্বশেষ সংবাদ