আওয়ামী লীগের জরিপ প্রতিবেদনঃ ৬২ এমপি এক বছর এলাকার সাথে সম্পর্কহীন

ফরিদপুর থেকে নির্বাচিত সাবেক মন্ত্রী  ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এখন সুইজারল্যান্ড এ অবস্থান করছেন। গত এক বছর ধরে নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। সংসদেও তিনি উপস্থিত হন না। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সংসদে সম্প্রতি তিনি ছুটির আবেদন জানিয়েছেন।
 তার সেই আবেদন জাতীয় সংসদ মঞ্জুর করেছেন। শুধু ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন একা নয়, এরকম ৬২ জন এমপির সন্ধান পাওয়া গেছে যারা গত এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে তাদের নির্বাচনী এলাকায় যান না। নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে যাদের প্রায় কোনো সম্পর্কই নেই।
 এ রকম এমপিরা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবে না বলেই একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদেরকে এ ব্যাপারে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের একাধিক কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এবং নীতিনির্ধারনী বৈঠকে বলেছেন, সারা দেশে নির্বাচন নিয়ে জরিপ হচ্ছে এবং জরিপে যারা এগিয়ে থাকবে তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।
 জরিপের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সভাপতির উদ্যোগে সারা দেশে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বর্তমান এমপিদের কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তারা এলাকায় কতবার যান, এলাকার জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কি, নির্বাচনে তারা যে অঙ্গীকার গুলো করেছেন তা কি সঠিক ভাবে পূরণ করতে পারছেন কিনা? ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। এই তথ্য-উপাত্ত-তে দেখা গেছে, ৬২ জন এমপি তাদের নির্বাচনী এলাকায় সঙ্গে সম্পর্কহীন।
ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি আসনে একজন এমপিকে এলাকায় পাওয়াই যায় না। এলাকায় তিনি আসেন না, এলাকার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। এমপি হিসেবে দায়িত্ব তিনি কি দায়িত্ব পালন করেন? তা এলাকাবাসী জানেনই না।
আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পরিচালিত একটি জরিপে ওই নির্বাচনী এলাকার জনগণের ৮০ শতাংশই বলেছেন তারা স্থানীয় এমপিকে চেনেন না। চট্টগ্রামের দুইজন এমপি পাওয়া গেছে যারা তাদের নির্বাচনী এলাকার সাথে সম্পর্ক রাখেন না। খুলনা, বরিশাল এবং বৃহত্তর দক্ষিণ অঞ্চলে ১৪ জন এমপি পাওয়া গেছে যারা তাদের নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে সম্পর্কহীন।
 উত্তরাঞ্চল জেলাগুলোতে এরকম ১৬ জন সংসদ সদস্যের সন্ধান পাওয়া গেছে যারা নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন না এবং নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
আওয়ামী লীগের এবার মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে যে মাপকাঠি নির্ধারিত হয়েছে তার মধ্যে একটি বড় শর্ত হলো নির্বাচনী এলাকার জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে হবে।
 বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়ানো যাবে না এবং এলাকায় জনপ্রিয় থাকতে হবে। সে বিবেচনায় এই ৬২ জন যে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছে না সেটা মোটামুটি নিশ্চিত। তারপরও যদি এদের কেউ মনোনয়ন পায় সেটি হবে একটি বড় ধরনের বিস্ময়।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * আওয়ামী লীগের জরিপ প্রতিবেদ
সর্বশেষ সংবাদ