শিরোনাম
কালীগঞ্জে পৌষ সংক্রান্তির ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা অনুষ্ঠিত   » «    ফ‍্যাসিবা আ’ওয়ামী সরকারের সকল মামলায় খালাস “বাবর” মদনে আনন্দ মিছিল   » «    দৌলতপুরে ইউসুফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি এলমেচ গ্রেফতার   » «    ভারত যাওয়ার পথে ইডেন ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২   » «    সবজিতে স্বস্তি ফিরলেও চড়া মাছ-মুরগি ও চালের বাজার   » «   

শত শত অভিবাসীকে হত্যা করেছে সৌদি সীমান্তরক্ষীরা: রিপোর্ট

ইয়েমেন সীমান্তে সৌদি আরবের সীমান্তরক্ষীদের হাতে শত শত অভিবাসী নিহত হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক নতুন প্রতিবেদনে এই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্তে শত শত মানুষকে গুলি করা হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ইথিওপিয়ার। তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেন পাড়ি দিয়ে সৌদি প্রবেশ করতো।
অভিবাসীরা বিবিসিকে বলেছেন, গুলির আঘাতে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তারা মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছে। সৌদি আরব এর আগে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা অভিবাসীদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি চালিয়েছে।
অভিবাসীরা সাক্ষী দিয়েছে। তাদের মতে, সৌদি-ইয়েমেন উত্তর সীমান্তে সৌদি পুলিশ এবং সৈন্যরা গুলি চালিয়েছে। কখনও কখনও বিস্ফোরক অস্ত্র দিয়েও অভিবাসীদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। অভিবাসীরা বিবিসিকে বলেছে, এক রাতে ইয়েমেন হয়ে সৌদি প্রবেশের সময় মহিলা এবং শিশুসহ একদল ইথিওপিয়ান আটক হয়। তারা বড় ধরনের গোলাগুলির মুখোমুখি হয় সে রাতে। টানা গুলি চলতে থাকে তাদের দিকে।
গত বছরের জুলাই মাসে সীমান্ত পেরিয়ে ৪৫ জনের একটি দল প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় তাদের কয়েকজন নিহত হয়। যারা প্রবেশের সময় বেঁচে ফিরেছেন তাদের অনেকের গায়ে গভীর আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মতে, বছরে ২ লাখের বেশি মানুষ বিপদজনকভাবে যাত্রার করে। অভিবাসীরা হর্ন অব আফ্রিকা থেকে সমুদ্রপথে ইয়েমেনে পাড়ি দেয় এবং তারপরে সৌদি আরবে প্রবেশ করে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, পথ চলাকালে অনেকেই কারাভোগ ও মারধরের শিকার হয়েছেন।
সমুদ্র পারাপার যথেষ্ট বিপজ্জনক। গত সপ্তাহে জিবুতির উপকূলে একটি জাহাজডুবির ঘটনায় ২৪ জনের বেশি অভিবাসী নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ইয়েমেনের প্রধান অভিবাসী রুটগুলোর ধারে নিহতদের কবরে ভরা।
হিউম্যান রাইটস প্রতিবেদনের প্রধান লেখক নাদিয়া হার্ডম্যান বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা যা নথিভুক্ত করেছি তা মূলত গণহত্যা। লোকেরা এমন কিছু জায়গার বর্ণনা করেছে যেগুলো হত্যার মূল ক্ষেত্র বলে মনে হচ্ছে। সমস্ত পাহাড়ে মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।’
প্রতিবেদনটিতে ২০২২ সালের মার্চ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়ের ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। হার্ডম্যানের মতে, প্রতিবেদনে সর্বনিম্ন ৬৫৫ জন নিহতের ঘটনা রেকর্ড করা আছে। তবে প্রকৃতপক্ষে এক হাজারের বেশি হতে পারে।
উত্তর সীমান্তে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে সংঘটিত ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের রিপোর্ট গত অক্টোবরে রিয়াদে সরকারের কাছে পাঠানো জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি চিঠিতে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
তারা চিঠিতে বলেছিল, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া কামানের গোলা এবং ছোট অস্ত্র ব্যবহার করে বড় আকারের, নির্বিচারে আন্তঃসীমান্ত হত্যাকাণ্ডের একটি পদ্ধতিগত প্যাটার্ন বলে মনে হচ্ছে। সৌদি সরকার বলেছে তারা অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। তবে জাতিসংঘের বর্ণনাকে তারা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন
বিষয়: * অভিবাসী নিখোঁজ * জাতিসংঘ * সৌদি সীমান্তরক্ষীরা * হিউম্যান রাইটস
সাম্প্রতিক সংবাদ