পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই, নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জ শহরের সূর্যমূখি জেনারেল হাসপাতালে এক প্রসুতির পেটের ভেতরে রক্ত পরিস্কার করার মফ্স কাপড় রেখেই সেলাই করে দিয়েছেন ডা. আরশেদ আলী। এ ঘটনার ৭ মাস ৩০ দিন পর ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে পুণরায় ওই নারীর অপারেশনের পর সেই মফ্স কাপড় অপসারণ করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়টি ভাইরাল হলে জেলাজুড়ে শুরু হয় নানান সমাচলোচনা। সেই সাথে সূর্যমূখি জেনারেল হাসপাতাল ও ডা. আরশেদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে।
গেল বছরের ১৩ ডিসেম্বর প্রসব ব্যথা নিয়ে হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত সূর্যমূখি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন স্মৃতি সূত্রধর নামে এক নারী। তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের ওয়ার্কসপ শ্রমিক স্বপন সূত্রধরের স্ত্রী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ওই নারীর সিজার করানো হয়। প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন ডা. আরশেদ আলীর মাধ্যমে সূর্যমূখি জেনারেল হাসপাতালে তার সিজার সম্পন্ন হয়।
কয়েকদিন পর থেকেই ওই নারী আবারও তার পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। পুনরায় তিনি হাসপাতালে গেলে আলট্রাসনোগ্রাফি করে পেটে টিউমার হয়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে পুনরায় আলট্রাসনোগ্রাফি ভুক্তভোগীর পেটে বাড়তি কিছু একটা রাখা হয়েছে বলে ধরা পড়ে। আবারও অপারেশন করতে হবে এবং এর ব্যয় হবে ৯ লাখ টাকা এমন পরামর্শ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সবকিছু বুঝতে পেরে ভারতের বেঙ্গালুরুতে মজুমদার শাহ হাসপাতালে অপারেশনে পর দুটি গজ (ব্যান্ডেজের কাপড়) বের করেন ডাক্তার। বর্তমানে কিছুটা শঙ্কামুক্ত হলেও জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আছেন ওই নারী।
ভারতে চিকিৎসায় সর্বমোট ৫ লাখ ৬৬ হাজার রুপি খরচ হয়েছে তার। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে ডাক্তার মো. আরশেদ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমরা ওই রোগীর সাথে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা আমাদের কাছে না এসে সিলেট এবং অন্যত্র চিকিৎসা করিয়েছেন।’
হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল হক জানান, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে কোন অভিযোগ পাইনি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’