লক্ষীপুরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ নিহত- ১, পুলিশসহ আহত-৫০
লক্ষীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষীপুরে বিএনপি’র পদযাত্রা ও আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে তবে তার পরিচয় জানা যায়নি পকেটে সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের কৃষকদলের একটি ব্যাচ ছিল। এ ঘটনায় পুলিশ, পথচারী ও দোকানী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম, যুবদল নেতা মো: লিটনসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।
এ সময় বেশ কয়েকটি দোকান, গাড়ী, ২টা হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের লক্ষীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ কাঁদানী গ্যাস ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিএনপি ও আওয়ামীলীগ এ দু’দলের পূর্ব নির্ধারিত পৃথক কর্মসূচি পালন করার উদ্দেশ্যে দুপুর থেকে দলীয় নেতা-কর্মীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিএনপি’র কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক এ্যানি চৌধুরীর নেতৃত্বে শহরের গোডাউন রোড থেকে পদযাত্রায় মিছিল নিয়ে বের হন। এসময় শহরের আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ব্যানার পেষ্টুন ছেঁড়া শুরু করে বিএনপির কর্মীরা। স্থানীয়রা জানান, মিছিলের মাঝামাঝি স্থান থেকে বিএনপি’র ৩০/৪০ জন নেতা-কর্মী হঠাৎ করে কলেজ রোডের দিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আসা ১৫/২০ জনকে ধাওয়া করে। এ সময়
২টি অটোরিক্সা ও একটি দোকানে হামলা চালায় তারা। এতে দোকানী, পথচারীসহ ৫ জন আহত
হন।
এসময় গুরুতর আহত অবস্থায় মদিন উল্যাহ হাউজিং এর একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় আশ্রয়ের জন্য দৌড়ে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে এক যুবক। এর কিছুক্ষন পর ওই যুবক প্রচুর রক্তক্ষরণে মারা যায় বলে জানান বাড়ীর মালিক। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। এদিকে বিএনপির মিছিলটি ঝুমুর এলাকায় পৌঁছলে পেছন থেকে ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। একইভাবে শহরের বাগবাড়ী এলাকায়ও সংঘর্ষ হয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মধ্যে।
এদিকে বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে রামগতি সড়কের দিকে গিয়ে ঝুমুর দিকে যাওয়ার পথে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য কর ইট-পাটকেল ছোঁড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল ও কাঁদানী গ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের মধ্যে আবার সংঘর্ষ ঘটে। এসময় বিএনপির কর্মীরা শহরের আধুনিক হাসপাতাল ও দিশারী চক্ষু হাসপাতালে হামলাসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও দোকান ভাংচুর করে।
এসময় একটি মটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলাকারীরা সড়কে অবস্থান করে পুলিশ কে লক্ষ্য ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রানা, সদর থানার ওসি মোসলেহ উদ্দিনসহ প্রায় ৩০ জন পুলিশ আহত হয়। তবে বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের তাৎক্ষনিক নাম জানা যায়নি তাদের অনেককে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা
হয়েছে।
লক্ষীপুরের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ সাংবাদিকদের জানান, বিএনপি মিছিল নিয়ে নাশকতার উদ্দেশ্যে হাইওয়ে সড়কে উঠতে চাইলে আমাদের ফোর্স বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের হামলায় সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ও সদর থানা ওসিসহ পুলিশের প্রায় ৩০জন আহত হন বলে জানান তিনি। এসময় এসময় তিনি একজন নিহত হওয়ার নিশ্চিত করলে কি ভাবে ওই যুবক নিহত হয়েছে তা তিনি জানেন না।