সৈয়দপুরে সিটি ব্যাংকে আরও প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ঘাপলা, সমন্বয়ের চেষ্টা
এদিকে শাখার এই অনিয়ম ও দূর্নীতি তদন্তে ব্যাংকের কেন্দ্র থেকে অডিটের জন্য ২ জন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসেছেন। তারা দিনভর আগত গ্রাহকদের একাউন্ট চেক করা ও অভিযোগের ভিত্তিতে সমন্বয় ও আমানত উত্তোলনে সহযোগিতা করাসহ অন্যান্য বিষয় তদন্ত করেছেন। যা আগামী কার্যদিবসেও অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, শহরের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর বড় ভাইয়ের স্ত্রী রবিবার ব্যাংকে গিয়ে তার একাউন্ট চেক করলে হিসাবে গড়মিল পান। সে অনুযায়ী তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শণ করলে দেখা যায় প্রায় ১৪ লাখ টাকা ঘাপলা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, রবিবার প্রায় ৪২ লাখ টাকার অনিয়মের ঘটনা এখন পর্যন্ত বেড়িয়ে এসেছে। এছাড়া প্রায় শতাধিক আমানতকারী তাদের বিভিন্ন মেয়াদী ও সঞ্চয়ী হিসাবের টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। সেই সাথে সহস্বাধিক গ্রাহক আতঙ্কে তাদের একাউন্ট চেক করেছেন। শহরজুড়ে গ্রাহকদের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে ব্যাংকে গেলে তাদের ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। প্রায় ৩ ঘন্টা যাবত গেটে তালা দিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে সংবাদকর্মীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠলে ব্যাংক ম্যানেজার সুলতান মাহবুব খান বিকাল ৫ টায় প্রবেশ করতে দিলেও তদন্তে আসা কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলা বা পরিস্থিতির আলোকে কোন তথ্য দেয়া থেকে বিরত থাকেন।
বিউটি সাইকেল স্টোরের মালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি আলতাফ হোসেন বলেন, আমার ভাবীর একাউন্টে বিভিন্ন সময় বাসা ভাড়াসহ অন্যান্য খাত থেকে আসা অর্থ জমা হয়। সেই জমাকৃত টাকার পরিমান প্রায় ১৪ লাখ। বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ সেই একাউন্টের খোজখবর নিতে এসে জানা যায় হিসেবে গড়মিল আছে। এর ফলে অভিযোগ করায় কর্তৃপক্ষ টাকাগুলো সমন্বয়ের আশ্বাস দেন।
আরেক গ্রাহক শেফালী রানী বলেন, আমারও প্রায় ১০ লাখ টাকার হিসাব পাচ্ছিনা। ব্যাংকে আসলে ম্যানেজারসহ কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তাই এব্যাপারে আর বেশি কিছু বলা যাচ্ছেনা। কারণ এতে যদি সমস্যা হয়। আমার কষ্টের ধন আমি পাব কি পাবনা তা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় আছি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শরিফা বেগম নামে এক গ্রাহক তার এফডিআরের ৩৪ লাখ টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন অনেক আগেই তা তুলে নেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ওই শাখার এসিস্টেন্ট রিলেশনশিপ ম্যানেজার (এআরএম) এজিএম এসতেকুর ইসলাম সেতুকে পাকড়াও করে ওই গ্রাহক ও তার স্বজনরা।
সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পর থেকে গত শুক্রবার ও শনিবার গ্রাহকরা চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কে অতিবাহিত করেন। আজ রবিবার ব্যাংক খোলার সাথে সাথেই গ্রাহকদের ভীড় জমতে থাকে। সারাদিন গ্রাহকদের উপচেপড়া ভীড় আর অভিযোগের সমাধান দিতে এসির মাঝে ঘাম ঝরা অবস্থা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এমতাবস্থায় আজ আরও কয়েকজন গ্রাহকের আমানতের খেয়ানত হওয়ার খবরে শহরজুড়ে তোলপাড় চলছে।