হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এমসি বাণিজ্য! 

এমসি জটিলতা, আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ সহ পুলিশকে সতর্ক বার্তা
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
একই ব্যক্তির আদালতে দুই রকম এমসি দাখিল করায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালকে তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশসহ এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সতর্ক করেছেন আদালত। ৩০ মে মঙ্গলবার হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন।
আদেশ সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরের তোপখানা মহল্লার ইউসুফ মিয়ার সাথে তকবির মিয়ার মারামারি হয়। এ বিষয়ে ইউসুফ মিয়া ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। গত ২৫ মার্চ আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ রাকিব হোসেন। এমসি ভুল থাকার কারণে আসামির জামিন হয়। এরই প্রেক্ষিতে অভিযোগকারী ও ভিকটিম এমসির বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতে দরখাস্ত দাখিল করেন। দরখাস্তের প্রেক্ষিতে এমসিসহ হাসপাতালের রেজিস্ট্রারী খাতা তলব করা হয়।
কাগজপত্র ও রেজিস্ট্রারী খাতা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জখমী ইউসুফ আলীর যে এমসি ইস্যু করা হয়, তার সাথে জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রারী খাতার মিল থাকলেও ছাড়পত্রের জখমের মিল নেই। এরই প্রেক্ষিতে আদালত হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ আবু ইউসুফকে সত্যায়িত এমসি ফটোকপি করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন। এছাড়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বানিয়াচং থানার এসআই মোঃ রাকিব হোসেন আসামিপক্ষকে এমসির ফটোকপি প্রদান না করতে সতর্ক করা হয়।
জখমী ইউসুফ আলীর দুইটি এমসি দাখিল করেন আসামিপক্ষ। এক এমসির সাথে আরেক এমসির মিল নেই। ডাঃ আবু ইউসুফ গত ৩১/১২/২০২২ইং এ হাসপাতালে ভর্তি দেখিয়ে ০৬/০২/২০২৩ইং প্রদান করেন। যাহা আরএমও ডাঃ মোহিনী বেগম ও ডাঃ শরীফুল স্বাক্ষর করেন। একইদিন চিকিৎসা গ্রহণ করার পর দুইজন পৃথক ব্যক্তির জরুরি বিভাগের রেজিঃ নং-৫৩২১৭ ও ৬৬৪৯৯ হওয়ায় অস্বাভাবিক ও গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। আরও লক্ষ্যনীয় যে প্রকৃত ভিকটিমের নাম মোঃ ইউসুফ, বয়স-২৮, পিতা-আব্দুল শফিক মিয়া ও ভুল ইস্যুকৃত এমসির ভিকটিমের নাম মোঃ ইউসুফ আলী, বয়স-৫০, পিতা-শফিক মিয়া। উভয় এমসিতে আঘাতের মিল নেই। ইহাতে আদালতের প্রশ্ন যে, এ মামলার তদন্ত বিচার ও আসামির জামিন লাভের সাথে উক্ত এমসির সম্পর্ক বিদ্যমান থাকায় জেলা সদর হাসপাতালের কোনো একটি পক্ষ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আদালত ও বিচারব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে উক্ত এমসির মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিয়াছেন। আগামী ২২/০৬/২০২৩ইং তারিখের মধ্যে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক দুইজন বিজ্ঞ ডাক্তারকে সদস্য করে এবং সিভিল সার্জন কিংবা ডেপুটি সিভিল সার্জনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এমসি বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রায়ই এরকম ভুল এমসি ও রিপোর্টের প্রেক্ষিতে আদালত বিপাকে পড়েন। ইতোপূর্বেও বেশ কয়েকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপরও তাদের যোগসাজসে হাসপাতালের কতিপয় ডাক্তার এমসি বাণিজ্য করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে এমসি বাণিজ্যে