কলারোয়ায় ভগ্নিপতির ছোড়া পেট্রোলের আগুনে ঘুমন্ত শ্যালকসহ অগ্নিদগ্ধ ৩, আটক-১

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় রাতের আধারে ঘরের মধ্যে ভগ্নিপতির বিরুদ্ধে পেট্রোল নিক্ষেপ করে শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও তাদের শিশু কন্যাকে অগ্নিদগ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের ফুটবল মাঠের পাশের একটি বাড়িতে।
নির্যাতনের কারণে বোন সুফিয়া খাতুনকে স্বামীর বাড়িতে না পাঠানোয় শ্যালক ও ভগ্নিপতির মধ্যে বিরোধের জেরে পেট্রল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর পোড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি পেশায় আফিল জুট মিলের শ্রমিক।
এ ঘটনায় সবুজ হোসেনকে রাতে চন্দনপুর গ্রামের আশ্রয় দানকারী আব্দুল মান্নান বিহারীর ছেলে সোহাগ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে কলারোয়া থানা পুলিশ।
চন্দনপুর ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই গ্রামের আহাদ আলীর পুত্র কাদের হোসেনের ঘরের দরজায় বাইরে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে কে বা কারা পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে দগ্ধ হলেও দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি।
আগুনে পুড়ে গুরুতর দগ্ধ হন কাদের হোসেন, তার স্ত্রী শারমিন ও কন্যা ফাতেমা। তাদের চিৎকারে আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিবেশিরা উঠে এসে জানালার রড ও তালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদেরকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পাঠানো হয়।
আশংকাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আহত কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী বেনাপোলের সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিলো। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকিও দিত সবুজ। বিষয়টি কাদের সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছিলেন। কয়েকদিনের মধ্যে স্থানীয়ভাবে একটি শালিস-বৈঠকের কথা ছিলো।
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগি পরিবার ও প্রতিবেশিরা ধারণা করছেন, ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন দরজায় তালা মেরে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন বলেন, সোহাগ ও সবুজ পরষ্পর বন্ধু ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বোনকে কেন্দ্ৰ করে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় সোহাগকে সাথে নিয়ে চান্দুড়িয়া বাজার থেকে পেট্রোল ও তালা কিনেছিলো ভগ্নিপতি সবুজ।
কাদের হোসেনের ও অভিযুক্ত সবুজের স্ত্রী বোন সুফিয়া খাতুন জানান, ‘তার স্বামী সবুজ তাকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করে। এ কারণে সে স্বামীর ঘর করতে চায় না। এসব নিয়ে তাদের ঝামেলা চলছিলো।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আল আহমেদ আল মাসুদ জানান, কাদেরের অবস্থা মারাত্মক অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য দুজনের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহত কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন (সবুজের স্ত্রী) বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবুজের সহযোগী সোহাগকে আটক করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সবুজ হোসেনকে আটকের চেষ্টা চলছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * কলারোয়ায় ভগ্নিপতির ছোড়া পেট্রোলের আগুনে ঘুমন্ত শ্যালকসহ অগ্নিদগ্ধ
সর্বশেষ সংবাদ