১৯ শয্যা ভবনেই চলছে ৫০ শয্যার সেবা, জনবল সঙ্কটে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওরবাসী

নেএকোনা  প্রতিনিধি ঃ

মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯ শয্যার ভবনেই চলছে ৫০ শয্যার সেবা। এর ফলে চরম দুর্ভোগে মধ‍্যে  ভর্তিকৃত রোগীদের ওয়ার্ড ও বারান্দায় থেকে সেবা নিতে হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটার থাকার পরও নেই সিজারিয়ান ব্যবস্থা। হাওরাঞ্চলের প্রসূতি মায়েদে প্রাণহানীর ঝুঁকি নিয়েই যেতে হচ্ছে জেলা সদর অথবা ময়মনসিংহে। এতে প্রায়ই ঘটছে শিশু ও প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনা। স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসীনতা সহ জনবল সঙ্কটের কারণে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাওরাঞ্চলের অধিবাসীরা।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ৩১ শয্যা ও অপরটি ১৯ শয্যাবিশিষ্ট দুটি ভবন রয়েছে। ৩/৪ বছর পূর্বে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট ভবনটি জরাজিরন হয়ে পরায় এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সুদৃষ্টি না থাকায় ভবনটি অপসারণ করে নতুন ভবন তৈরি কোন উদ‍্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে ১৯ শয্যাবিশিষ্ট ভবনে চলছে ৫০ শয্যার সেবা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট দ্বিতল ভবনে কার্যক্রম শুরু হয় মদন উপজেল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। পরবর্তীতে ২০১১ সালে তিনতলা বিশিষ্ট আরও একটি ভবন নির্মাণ করে ৫০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩০ চিকিৎসক পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ৯ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ জন কনসালটেন্ট এর বিপরীতে আছেন ২ জন। তাঁদের মধ্যে এনেসতেসিয়া কনসালটেন্ট ডাঃ আতাউর রহমান এটাচম্যান্টে অন্য জায়গায় কর্মরত আছেন। টেকনোলজিষ্ট ৬ টি পদে বিপরীতে আছেন ২ জন। স্টোর কিপার পদটিও রয়েছে শূন্য। পরিসংখ্যান পদটি একজন স্বাস্থ্যসহকারী দিয়ে চালানো হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ডেন্টাল চেয়ার মেরামত করা জন্য ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। অদ্যবধি পর্যন্ত তা মেরামত করা হয়নি। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩১ শয্যার ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও ঝুঁকি পূর্ণ ভবনেই জরুরী বিভাগের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে । প্রতি বছর ভবন মেরামতের নামে সরকারের অর্থ অপচয় করা হয়েছে। ১৯ শয্যার ভবনে চলছে চিকিৎসা সেবা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভর্তি রোগী জানান, আমরা গরীব মানুষ উন্নত চিকিৎসা জন‍্য নেত্রকোনা বা ময়মনসিংহ যেতে পারিনা । এখানে ডাক্তারা নিয়মিত খোঁজ খবর নেয় না। অধিকাংশ ঔঘধ বাহির থেকে কিনতে হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষাও বাহিওে করাতে হয়। খাবারের মানও ভালো না।প্রয়োজন হলে নার্সদের ডাকাডাকি করলেও আসেনা। আসলেও রোগীদের সাথে খারাপ আচরন করে। নিয়মিত হাসপাতাল পরিস্কার না করায় দূর্গন্ধের কারণে থাকতে খুব কষ্ট হয়, ঘুমও হয় না।

মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরুল হুদা বলেন, আমি যোগদান করার পর ইসিজি মেশিন সচল ও স্থায়ী ঠিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করেছি। ভবন অপসারন ও নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে করেছি। ডেন্টাল চেয়ার মেরামতের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডাক্তার মো. সেলিম মিঞা জানান, সম্প্রতি কয়েকজন ডাক্তার বদলি হওয়ায় চিকিৎসক শঙ্কট আছে। অচিরেই ডাক্তার পোষ্টিং দেওয়া হবে।

অবকাটামোগত সমস্যার কারণে সিজারের কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিত্যাক্ত ভবন অপসারনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। নিম্মমানের খাবারের ব্যাপারে তিনি বলেন, মামলা জটিলতার কারণে টেন্ডার হচ্ছে না। তবে খাবার মান ভালো করার জন্য আমি ঠিকাদারের সাথে কথা বলবো।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * ১৯ শয্যা ভবনেই চলছে * জনবল সঙ্কটে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাওরবাসী