সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কূটনৈতিকদের ১০ দফা সুপারিশ

সদরুল আইনঃ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ দেখতে চায় কূটনীতিক মহল। এ লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দফায় দফায় বৈঠক করছে। একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টাও আস্তে আস্তে দৃশ্যমান হচ্ছে।
 তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং একটি নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।
 যদিও বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। এখনও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বলছে যে, নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।
 কিন্তু ভেতরে ভেতরে বিএনপির অনেক নেতা কূটনীতিকদের সাথে আলাপ আলোচনা করছে এবং একটি রাজনৈতিক সমঝোতার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
কূটনৈতিক মহল প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি নির্বাচনকালীন সরকারের রুপরেখা নিয়ে যেমন কাজ করছে, তেমনি আগামী নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, সেই লক্ষ্যে কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ তৈরি করেছে। এ সমস্ত সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
১। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে ভোটে পর যেন ফলাফল নিয়ে আপত্তি এবং অসন্তোষ থাকলে, নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ থাকলে সেই ফলাফল বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।
২। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে প্রশাসনের সর্বস্তরের বদলি এবং পদোন্নতির বিষয়টি সরাসরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করা হবে।
৩। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাবদিহি করতে পারবে এবং নির্বাচন কমিশন তাদেরকে যেকোনো ধরনের শাস্তি দিতে পারবে।
৪। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য যে সমস্ত মন্ত্রী এমপিরা পদে থেকে নির্বাচন করবেন তাদের সুযোগ-সুবিধা সীমিত করতে হবে এবং একই রকম সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে বিরোধী দলের প্রার্থীদের।
৫। নির্বাচনকালীন সময় যার বিরুদ্ধে যে মামলাই থাকুক না কেন, তারা যদি প্রার্থী বা প্রার্থীর এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে।
৬। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে অবাধে প্রচার প্রচারণার সুযোগ দিতে হবে।
৭। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর যেকোন অভিযোগ আপত্তি নির্বাচন কমিশনকে আমলে নিতে হবে এবং এই আপত্তি অনুযায়ী দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে নির্বাচনকালীন সময়ে।
৮। প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম সীমিত করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময় প্রধানমন্ত্রী তার নিজের নির্বাচনী এলাকা সহ অন্যান্য নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে চাইলে তিনি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তাকে কাজ করতে হবে।
৯। নির্বাচনের পর্যাপ্ত দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ দিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দিতে হবে এবং পর্যবেক্ষকদের বাছাই যাচাইয়ের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন উদারতা দেখাবে।
১০। নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনকারী পর্যবেক্ষকদের বুথে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে।
এই খসড়া প্রস্তাবের সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত করা যায় কিনা বা এই খসড়া প্রস্তাবের সঙ্গে অন্যদের মতামত কি এই নিয়ে এখন কূটনীতিকরা আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * কূটনৈতিকদের ১০ দফা সুপারিশ * সুষ্ঠু নির্বাচন