পুলিশের সোর্স শহীদের নিয়ন্ত্রণে বনানীর মাদক ব্যবসা 

রিয়াদ আহমেদঃ
রাজধানীর বনানীতে পুলিশের কথিত সোর্স শহীদের মাদক কারবারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বনানীর টিঅ্যান্ডটি মাঠের কোনায় ১ নম্বর গোডাউন বস্তিতে থাকেন শহীদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এড়াতে ভয়ঙ্কর অপরাধী থেকে বনে যান সোর্স। কথিত এই সোর্স ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো ও মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে স্থানীয়দের এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছেন। স্বাভাবিকভাবেই সোর্সদের আলাদা একরকম দাপট থাকে। কারণ তাদের পেছনে থাকে প্রশাসন।
অনুসন্ধান বলছে, শহীদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। মাদক কারবারে যুক্ত হয়ে থিতু হয়েছেন বনানীতে। দীর্ঘদিন ধরে বনানী-গুলশান থানা পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন তিনি। কড়াইল বস্তি জুড়ে গড়ে তুলেছেন এক শক্ত মাদক সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্ক। বস্তির বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন কুর্কমের মুল হোতা শহীদ। এছাড়া তার ঘরে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে প্রতিদিন বসে জুয়ার আসর।
বর্তমানে শহীদ বনানী থানার কয়েকজন এসআই এর সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, কখনো কখনো নিজেকে পুলিশ পরিচয়ও দেন শহীদ। পুলিশের হ্যান্ডকাফ, কোমড়ে পিস্তল ও পুলিশের স্টিকার লাগানো মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় তাকে।
বনানীর গোডাউন বস্তির বাসিন্দা মাদক নির্মূল কমিটির সদস্য আশরাফ আলী বলেন, পুলিশের কথিত সোর্স পরিচয়দানকারি শহীদ এলাকায় মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে পুলিশের নাম করে চাঁদাবাজি করে আসছে সে। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তার ঘরে জুয়া খেলা চলে। শহীদ এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বনানী থানার ওসির নাম ভাঙিয়ে চিহ্নিত মাদক ও জুয়ার কারবারীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলছেন শহীদ। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালেই সিটিং মামলায় চালান। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করছেন নিয়মিত। আবার ধরিয়ে দিয়ে ছাড়ানোর নাম করেও অর্থ আদায় করছেন।
নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, প্রথমে শহীদ তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। রাজি না হলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। তাতেও কাজ না হলে সাজানো মামলায় ধরিয়ে দেন। ছাড়িয়ে আনার নাম করে অর্থ দাবি করেন। অর্থ পেলেই ছাড়িয়ে আনেন। জানা যায়, শহীদকে ম্যানেজ করে মাদক কারবার চালিয়ে যান ফটিক, হৃদয়, শরীফ, আমিনুল, সাগরের মা, স্বপন, মফিজ, শুভ, আবিরসহ আরো অনেকেই।
এ বিষয়ে জানতে শহীদের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শহীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * পুলিশের সোর্স * বনানীর মাদক ব্যবসা
লাইভ রেডিও
সর্বশেষ সংবাদ