পাহাড়ে উৎসব মুখর পরিবেশে ধান কাটা শুরু করেছে জুম চাষিরা
সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়ি(রাঙ্গামাটি)প্রতিনিধিঃ
পাহাড়ে জুম চাষী বা জুমিয়ারা উৎসবমুখর পরিবেশে ধান কাটা শুরু করেছে । পাহাড়ে পাহাড়িদের একমাত্র ভরসা হলো জুম চাষ। জুম চাষ তাদের একটি আদি প্রথা। এটি তাদের ঐতিহ্য। পাহাড়ের ঢালে যুগ যুগ ধরে পাহাড়িরা পিরামিড পদ্ধতিতে জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সেটা এখনো ধরে রেখেছেন জুমিয়ারা।
তারা মাঘ-ফাল্গুল মাসে জঙ্গল কাটে। সে জঙ্গল চৈত্র মাসে শুরু থেকে আগুনে পুড়ে আগাছা পরিষ্কার করে। বৈশাখে সাধারণ ধানের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি যুক্ত ধানসহ নানা শাক- সবজি, ফলমূল ও মশলা জাতীয় শস্য বা ফসলের বীজ বপন করে থাকে। ভাদ্র- আশ্বিন মাসে ধান পাকা শুরু হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও জুমে পাকা ধান বা ফসল তোলার মৌসুম বলে জানান জুমিয়ারা।
তাই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উচ্চতায় তাগলকছড়া মৌন এলাকায় বসবাস করা ফাক্কো চাকমা নামক এক জুমিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবছর তাদের জুমে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। তাদের ঘরে ঘরে প্রতিটি মুহূর্ত এইসময় খুব আনন্দে কাটে। প্রায় প্রতিদিনই আপ্যায়ন থাকে যাকে নবান্ন (নয়া ভাত) বলা হয়। তেমনিভাবে আরো বেশ কয়েকজন জুমিয়ার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ধানের অবস্থা খুবই ভালো , এ ছাড়াও মারফা, চিনাল, বেগুন, তুলা,করলা, ঢ্যাঁড়শ কুমড়া, ধনিয়া, আদা, হলুদ, শুকুর, মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা, লাউ, শিম, কাউন, তিল, মরিচ, কচু, জুমের আলু, কলা ও জুমের বিভিন্ন ধরনের শাক-সব্জি ও ফলমূল হয়েছে বলে জানান।
জুমে উৎপাদিত ফলমূল ও শস্য বিক্রয় করে অর্থনৈতিক চাকাকে সচল করে জুমিয়ারা। তাই পাহাড়ে পাহাড়িরা কৃষি কাজে এগিয়ে রয়েছেন বলা যায় বা পাহাড়ে জুমিয়ারা কৃষিকে ধরে রেখেছেন বলা হয়ে থাকে।
একটু দেরিতে আসবে তিল,আদা, হলুদ ও মসল্লা জাতীয় সহ অন্যান্য ফসল ও ফলন। জুমে উৎপাদিত আদা,হলুদ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।