তাহিরপুরে বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ
তাহিরপুর( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ব্রাম্মণগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে দূর্নীতি ও অনিয়ম এর অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি সহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানাগেছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু তাহের ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু সাইদ এবং বিদুৎসাহী সদস্য একই পরিবারের লোক। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আত্মীয় ও পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে গোপনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন। সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সম্পর্কে আপন দুই ভাই। এমনকি তারা বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে বরাদ্ধের লাখ লাখ টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যর অনুদানকৃত দশ লাখ টাকা এবং দাতা সদস্যর নামে দুই লাখ টাকা সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তি, পরীক্ষার ব্যবহারিক ফি, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তার নিজস্ব মোবাইল ফোন সীমে অভিভাবক হয়ে টাকা আত্মসাৎ করে এসেছেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয় ।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ে দুইবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করার নিয়ন থাকলেও আবু সাইদ অদৃশ্য শক্তির বলে নিয়ম বহিভুতভাবে এখন পর্যন্ত জোরপূর্বক তিনবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ও তার ভাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের আত্মীয় ও ভাই ভাতিজা এবং মোঠা অংকের টাকার বিনিময়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।আরো জানা যায়, গোপনে ৭ আগষ্ট স্থানীয় একটি পত্রিকায় জনবল অবকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ মোতাবেক ব্রাক্ষণগ্রাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের (নিম্ন মাধ্যমিক এমপিওভুক্ত) জন্য একজন অফিস সহকারী কাম হিসেব সহকারী, একজন নিরাপত্তাবর্মী, একজন পরিচ্ছন্নকর্মী, একজন নৈশ প্রহরী ও একজন আয়া আবশ্যক মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বিধি অনুযায়ী পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিদ্যালয়ের নোটিশবোর্ড ও দর্শনযোগ্য স্থানে লাগানোর কথা থাকলেও তা না করে গোপন করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। যার ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী আবেদন করতে পারেনি। যারা করেছেন তাদের বেশির ভাগ আবেদন বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে প্রত্যাহার করে সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আত্মীয় ও নিজস্ব বলয়ের লোকদের আবেদন বহাল রেখেছেন। ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক, সভাপতি এবং বিদ্যুৎসায়ী সদস্য একই পরিবারের লোক হওয়ায় মিটিংয়ের নামে উপস্থিতি সাক্ষর নিয়ে রেজিলেশন আকারে নিয়োগ বিঙপ্তি প্রকাশ করে দুর্নীতি জাহের করার চেষ্টা করছেন।
ম্যানিজিং কমিটির সদস্য আব্দুর রহিম, স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য জিল্লু মিয়া, সোহেল মিয়া, রুখন উদ্দিন এবং নুুরুল আমিন বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আমাদের জানাননি। খুব গোপনে আমাদের অগোচরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পক্রিয়াটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। নিয়োগ পরীক্ষাটি বন্ধ রাখার জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে তারা অনুরোধ জানান।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আবু সাইদ বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য এক জনসভায় দশ লাখ টাকা অনুদান দেয়ার কথা বলেছিনে, কিন্ত এখনও এই অনুদান আমরা পাইনি। দাতা সদস্যর দুই লাখ টাকাসহ মোট সাত লাখ টাকা ব্যায়ে বিদ্যালয়ের একটি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।নিয়োগ পরীক্ষায় আমার কোন ভাই বাতিজা নেই বলে তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা সচ্চ এবং নিরপেক্ষ ভাবে সমপুন্ন করার জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বলেছি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু তাহের সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগামী ২৯ তারিখ নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় কোন অনিয়ম হবে না। তিনি বলেন, আমি ছাত্র ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেনি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লিখিত অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাহিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতা মিজানুর রহমানকে বলা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রায়হান কবির বলেন, বিদ্যালয়ে দুর্নীতির বিষয়ে একটি একটি লিখিত পেয়েছি, কিন্তু নিয়োগে অনিয়ম বা বন্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। এরপও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতা নির্দেশ দিয়েছি তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে।