সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও সেবা থেকে বঞ্চিত রোগীরা

 

শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ

 

সরকারী হাসপাতালে আল্ট্রা সনোগ্রাম মেশিন থাকলেও তার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বিশেষ করে গর্ভবতী রোগীরা প্রয়োজনীয় চেকআপ করতে না পেরে দূর্ভোগে পড়েছেন। জরুরী ক্ষেত্রে তারা বাইরে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে আল্ট্রা সনোগ্রাম করার কারণে অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় করতে বাধ্য হচ্ছেন।

 

ফলে রোগীদের হয়রানীসহ ভোগান্তি বেড়েছে। সামান্য ত্রুটির কারণে সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে রোগীদের বাইরে থেকে চেকআপ করানোর নির্দেশ দিচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে।

 

শহরের বাঙ্গালীপুর মাস্টারপাড়ার মোকসেদা বেগম, নয়াটোলা ডিআইবি রোডের সালমা বেগম, মুন্সিপাড়ার মাহমুদা খাতুন প্রমুখ রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, আল্ট্রা সনোগ্রাম করার দরকার হলে মেশিন খারাপের কথা বলে বাইরের কোন ক্লিনিক বা প্যাথোলজীকাল সেন্টার থেকে চেকআপ করানোর জন্যে বলেন ডাক্তাররা।

 

হাসপাতালে মেশিন থাকতেও কেন বাইরে করতে হবে এমন প্রশ্ন করলে তারা জানান, মেশিনে সমস্যা আছে। রিপোর্ট পরিস্কার আসেনা। তাই তারা নিজেদের ইচ্ছেমত প্রতিষ্ঠান থেকে আল্ট্রা সনোগ্রাম করতে বলেন। সেখানে গেলে অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়। এতে রোগীরা সরকারী চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

 

এব্যাপারে হাসপাতালের আল্ট্রা সনোগ্রাম বিভাগের অফিস সহায়ক সাবিত্রি রায় বলেন, মেশিনটিতে চলতি বছরের জুন মাসে সমস্যা দেখা দেয়। টেকনিশিয়ান এসে মেরামত করে গেলেও এখন আবারও ডিস্টার্ব দিচ্ছে। রিপোর্ট স্পস্টভাবে আসেনা। ফলে রেজাল্ট প্রদানে সমস্যা হয়।

 

একারণে আমরা রোগীদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলি। তাতে যদি তারা সম্মত হয় তাহলে এখানেই ডাক্তাররা তাদের চেকআপ করে দেন। নয়তো বাইরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে রোগীরা নষ্ট জেনে এখানে আর করাতে চায়না, বেশিরভাগই অন্য জায়গা থেকে আল্ট্রা সনোগ্রাম করে আসেন।

 

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নাজমুল হুদা বলেন, মেশিন বরাদ্দ পেলেও সংশ্লিষ্ট সনোলজিস্ট পদ সৃজন করা হয়নি। মেশিন চালাতে মূলত সনোলজিস্ট প্রয়োজন। তারপরও আমরা যারা এবিষয়ে জানি তারা কাজটি করি। মেশিনে এমনিতে কোন সমস্যা নেই, তবে প্রিন্ট একটু ঝাপসা হয়। তবুও আমরা বুঝতে পারি।

 

রোগীরা এই অসুবিধা জানার পরও রাজি থাকলে তাদের এখানেই চেকআপটা করানো হয়। আর যদি সম্মত না হয় তাহলে বাইরেই করাতে হয়। তিনি আরও বলেন, এই সমস্যার বিষয়ে আমরা একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। কিন্তু তারপরও কোন সুরাহা পাইনি। তাই অসুবিধা নিয়েই আল্ট্রা সনোগ্রাম মেশিনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

 

সচেতন মহল দ্রুত এই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে মেশিনটির টেকনিক্যাল ত্রুটি দূর করাসহ সনোলজিস্ট নিয়োগ দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। নয়তো সৈয়দপুরসহ আশেপাশের প্রায় ৫ লাখ মানুষ হয়রানীর শিকার হবেন। যা সরকারের জনস্বার্থমুলক উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন এলাকাবাসী।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

বিষয়: * আল্ট্রা সনোগ্রাম * সৈয়দপুর