জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ তিন দফা দাবিতে পাঁচ শিক্ষার্থী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন টানা ২৩ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। এ সময়ের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে তাদের অনশন অব্যাহত ছিল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা হলেন— ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ফয়সাল মুরাদ এবং ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একই বিভাগের ফেরদৌস শেখ। তাদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়া ও শারীরিক দুর্বলতাসহ নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনে অংশ নিচ্ছেন— ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বোটানি বিভাগের একেএম রাকিব, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ ও ইতিহাস বিভাগের শাহিন মিয়া এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অপু মুন্সি।
আন্দোলনরতদের দাবি, শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকরের সময়সীমা দ্রুত জানাতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে এবং ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করারও দাবি জানানো হয়েছে।
অনশনরত জবি শাখা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “প্রশাসন আগের মতোই অজুহাত দেখাচ্ছে। আমরা তালবাহানা শুনে ফিরে যাব না। আমাদের দাবি না মানলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে চলে যেতে হবে।”
অসুস্থ শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, “২১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনশনে আছি। আমিসহ একজন সহপাঠী অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।”
অন্যদিকে জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “অবস্থান কর্মসূচি থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচি দিয়েও প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি। দাবি না মানা পর্যন্ত রক্তের শেষ বিন্দু দিয়ে হলেও আমরা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাব। মৃত্যু হলেও তার দায়ভার নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। তাদের দাবি, প্রশাসন দ্রুত সমাধান না দিলে পরিস্থিতি আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করতে পারে।







