ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ৭ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার রাজাপুর ও কুসুমপুর সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান বিরোধী বিশেষ অভিযানের সময় তাদের আটক করা হয়। একই অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ফেনসিডিলও উদ্ধার করা হয়েছে।
সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বিজিবির তৎপরতা
মহেশপুর ৫৮ বিজিবির টহল দল দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান রোধে কঠোর নজরদারি চালিয়ে আসছে। সীমান্তে বিজিবির উপস্থিতি ও টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে জানা গেছে।
বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজাপুর গ্রামের পুকুরপাড় এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৩৩ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি, কুসুমপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সীমান্ত পার হওয়ার সময় ৭ জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মাদক চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ: উদ্বেগজনক পরিস্থিতি
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ পারাপার ও চোরাচালানের জন্য আলোচিত। বিজিবি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও মাদক চোরাচালান এবং সীমান্ত পারাপারের ঘটনা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে স্থানীয় চক্রগুলোর মাধ্যমে মাদক পাচার ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে বলে ধারণা করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেই জীবিকার জন্য চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত হয়, যা আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। বিজিবি ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।
আইনি ব্যবস্থা ও সরকারের পদক্ষেপ
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মাদক উদ্ধার ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় আরও কঠোর অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকার ইতিমধ্যেই সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে উচ্চ প্রযুক্তির নজরদারি ক্যামেরা ও অন্যান্য প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এতে চোরাচালান ও অবৈধ পারাপার কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সীমান্ত নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদারে বিজিবির পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও জনসচেতনতার গুরুত্ব অপরিসীম। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করা হলে চোরাচালান ও অবৈধ পারাপারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
এই অভিযানের মাধ্যমে বিজিবি আবারও প্রমাণ করলো যে সীমান্ত অপরাধ দমন করতে তারা বদ্ধপরিকর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে সীমান্ত অপরাধ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।