বান্দরবান প্রতিনিধি:
মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে গত কয়েক মাসে একের পর এক স্থল মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশের শূন্য রেখা অঞ্চলে স্থল মাইন বিস্ফোরণে বহু বাংলাদেশি নাগরিক নিহত এবং আহত হয়েছেন।
এমতাবস্থায়, স্থানীয় কৃষকরা ও সীমান্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছেন। বিশেষত, গরু ও অন্যান্য পশু আনতে সীমান্তের কাছে যাওয়া লোকজন প্রায়ই স্থল মাইন বিস্ফোরণের শিকার হচ্ছেন। এর ফলে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছে এবং অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মে নুরুল আবছার (১৮) এবং মো. বাবু (১৭) নামের দুই যুবক বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকায় স্থল মাইন বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমন ঘটনা আরও ঘটেছে, যেখানে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষগুলো মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে অথবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।
আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখায় স্থল মাইন পুঁতে রাখছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব মাইন বিস্ফোরণ শুধু বাংলাদেশের জন্যই বিপদজনক নয়, বরং সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
অন্যদিকে, স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে, আরাকান আর্মির সদস্যরা মিয়ানমারের গেইট দিয়ে প্রবেশকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে চাদাবাজি করছে এবং এক ধরনের ভয়ঙ্কর শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এর ফলে, সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের জন্য জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
এ পরিস্থিতিতে, রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন (এআরও) তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন এসব অপরাধ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বাংলাদেশের সীমান্তে আরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পাশাপাশি, বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের দাবি উঠেছে।