সোহেল রানা,জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ:
নওগাঁর মান্দায় গভীর রাতে প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে মারা গেছে একটি গাভীন গরু, একটি ছাগল এবং ৮-১০টি হাঁস-মুরগি। ঘটনার পর থেকে কেবল পোড়া গোয়ালঘরের সামনে দাঁড়িয়ে কান্না আর হাহাকারে সময় পার করছেন মোসলেম আলী সরদার (৬৫) ও তার স্ত্রী মাহফুজা বেগম (৫২)। তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না, সন্তানসম সেই প্রাণীগুলো আর নেই।
কী ঘটেছিল সেই রাতে?
বুধবার (১৪ মে) ভোররাতে মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের নহলা কালুপাড়া (ভূতপাড়া) গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, তারা ভোরবেলায় আগুন দেখে ছুটে আসেন। মোটরের মাধ্যমে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন, কিন্তু ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ক্ষতির পরিমাণ
দম্পতির দাবি, একটি পাঁচ মাসের গাভীন গরু, একটি বড় ছাগল ও হাঁস-মুরগি পুড়ে মারা গেছে। ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক দুই লাখ টাকা। গোয়ালঘরে এখন পড়ে আছে পোড়া কাঠ, ছাই ও একটি নিস্তব্ধতা—যেটা প্রতিদিনের জীবনযাত্রা পাল্টে দিয়েছে পরিবারটির।
“আমরা তো ছেলের মতোই আদর করতাম গরুটা…”
মাহফুজা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন,
“প্রাণীগুলারে ছোলের মতো আদর করতাম। এখন ঘরটা শূন্য, বুকে ব্যথা লাগে। বিচার চাই।”
স্বামী মোসলেম আলী সরদার বলেন,
“আমারে মারলেও এত কষ্ট পাইতাম না। ওরা তো কিছু বলে না, অবলা প্রাণী।”
তদন্ত চলছে, দায়ীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা
ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুক্রবার (১৬ মে) তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই এরশাদ আলী মুঠোফোনে বলেন—
“আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করছি। শত্রুতামূলক আগুন দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।”
ছেলে ছুটি নিয়ে বাড়ি
দম্পতির গণমাধ্যমকর্মী ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান গোলাপ ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছেন। তিনি বলেন,
“আমার বাবা-মা গরু-ছাগলকে সন্তান মনে করতেন। তারা যেন ভেঙে পড়েছেন। আমরা দোষীদের বিচার চাই।”