মো. গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। কে বা কারা গভীর রাতে রাইস মিল ও গভীর নলকূপের মিটার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এসব ঘটনায় থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের হলেও এখনো কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু চুরি করেই ক্ষান্ত হয়নি চক্রটি। চুরি করা প্রতিটি মিটারের পাশে মোবাইল নম্বর লিখে রেখে যাচ্ছে চোরেরা। সেই নম্বরে ফোন করলে তারা সরাসরি টাকা দাবি করছে। নির্ধারিত পরিমাণ টাকা দিলে মিটার ফিরিয়ে দেবে, না দিলে আবারও চুরি করার হুমকি দিচ্ছে তারা। এতে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের শংকরপৈ মোড়, বকপাড়া মোড়, নারায়ণপাড়া গ্রাম ও মুগাইপাড়া এলাকায় চারটি রাইস মিল ও গভীর নলকূপের মিটার চুরি হয়। প্রতিটি স্থানে মোবাইল নম্বর রেখে যায় চোরেরা—মোবাইল নম্বর প্রায় একই, শুধু শেষের সংখ্যাগুলো আলাদা।
শংকরপৈ মোড়ের রাইস মিল মালিক আপন সরকার বলেন,
“সকাল ৫টার দিকে মিল খুলতে গিয়ে দেখি মিটার নেই। পাশে একটি মোবাইল নম্বর লেখা: ০১৯৪৬৮৯৩০৫৪। ওই নম্বরে ফোন করলে তারা ৬ হাজার টাকা দাবি করে এবং হুমকি দেয়—টাকা না দিলে যতবারই মিটার বসানো হবে, ততবারই চুরি করা হবে।”
এছাড়া ভবানীগঞ্জ এলাকাতেও দুইটি মিটার চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে একটি মিটার পরে উদ্ধার হলেও অন্যটি এখনও নিখোঁজ।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর বাগমারা জোনাল অফিসের ডিজিএম আসাদুজ্জামান বলেন,
“বৃহস্পতিবার রাতেই ছয়টি মিটার চুরির খবর পেয়েছি। মিটার চুরির এমন ঘটনা দেশে একটি সংঘবদ্ধ চক্র ঘটিয়ে আসছে। মোবাইল নম্বর রেখে টাকা দাবি করার বিষয়টিও এরই অংশ। আগেও অন্য জোনে কাজ করার সময় পুলিশ সহযোগিতায় কয়েকজনকে ধরতে পেরেছিলাম।”
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন,
“এখন পর্যন্ত কয়েকটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই চক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় না আনা হলে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সেবার স্বাভাবিকতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।