মুহ. মিজানুর রহমান বাদল, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের জন্য নির্মিত আধুনিক ভবনটি নির্মাণের পর থেকেই তালাবদ্ধ। গত দুই বছরেও খোলা হয়নি অফিসের দরজা। চত্বর জঙ্গলাকীর্ণ, ফটকে তালা ঝুলছে—সরকারি এই অফিস এখন যেন এক পরিত্যক্ত ভূতুড়ে বাড়ি।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, মূল ফটক থেকে শুরু করে পুরো ভবন চত্বর জঙ্গলে ভরে গেছে। আশপাশের স্থানীয়দের ভাষ্য, অফিসে দীর্ঘদিন কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখা নেই। ফলে বিএডিসির সেবা পেতে গ্রাহক ও কৃষকরা পড়ছেন চরম দুর্ভোগে।
উপজেলার কাংশা গ্রামের কৃষক মো. বাবুল হোসেন জানান, “ধান চাষের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে ছাড়পত্র প্রয়োজন। তিন মাস ধরে অফিসে ঘুরছি, কিন্তু কেউ থাকে না। ফোন দিলেও কোনো গুরুত্ব দেয় না।”
আঙ্গারিয়া মহল্লার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, “গভীর নলকূপের ড্রেন সংস্কারের আবেদন করেছিলাম উপজেলা প্রশাসনে। তদন্তের জন্য বিএডিসি অফিসে পাঠানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। অফিসে গিয়েও কাউকে পাইনি।”
অফিস সংলগ্ন দোকানদার ও স্থানীয়দের ভাষ্য, কৃষকরা নিয়মিত কাজের জন্য আসে, কিন্তু অফিস বন্ধ পেয়ে ফিরে যায়। কর্মকর্তারা আসেন না, সব সময় তালা দেয়া থাকে।
জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিএডিসি সিংগাইর অফিসের জন্য আধুনিক দুইতলা ভবন নির্মাণ করে। তবে ভবন নির্মাণের পর থেকে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে সরকারি এই অবকাঠামো আজ অচল ও জঙ্গলাকীর্ণ।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী রতন কুমার সরকার বলেন, “মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া ও সিংগাইর—এই তিন উপজেলায় আমি দায়িত্বে আছি। জনবল সংকট রয়েছে। তারপরও সপ্তাহে দুই-তিন দিন অফিসে যাই।”
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান সোহাগ বলেন, “এদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে ভালো জানা যাবে। আমার জানা মতে, অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তিন মাস অন্তর সেচ বিষয়ক সভা করেন এবং মাঝে মাঝে অফিসেও আসেন।”
অবহেলিত এই সরকারি দপ্তর কার্যকর করতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে কৃষকদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।