মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের বিতর্কিত ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধার অপসারণের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে ইউনিয়নের নাগরিক সমাজ।
বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ১১টায়ৃ নলছিটি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল মৃধার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের একাধিক অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. বশিরুজ্জামান মিলন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দলের ছত্র ছায়ায় বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়ে ইউনিয়ন প্রশাসনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের তহবিল আত্মসাৎ, ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের নামে শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করে তা ব্যাংকে জমা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে অনিয়ম, ওয়ারিশ সনদ, ভাতা কার্ড ও ভিজিডি চালে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়।
গ্রাম্য সালিশে অর্থের বিনিময়ে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগও আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। সেই সাথে নিরপেক্ষ প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জনভোগান্তি নিরসনের ও দাবী জানান তারা।
নাগরিক সমাজ জানায়, আমরা তার অনিয়মের অভিযোগে দ্রুত অপসারণের দাবীতে ইউএনও এর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি ২২ জুন। আগামী ২ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া না হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মো. রিমন মল্লিক, শেখ সজীব, মো. হান্নান সরদার, মো. রাসেল মল্লিক, মো. সেন্টু হাওলাদার প্রমুখ।
তাঁরা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে দপদপিয়া ইউনিয়নের জনগণ বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করবে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার বিরুদ্ধে যারা কথা বলছে, তাদের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। আমি ২২ জুন থেকে পরিষদে যেতে পারছি না, তবে বাড়িতে বসেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, তারা আমাদের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে, আমরা তা গ্রহণ করেছি। যেহেতু তিনি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তাই সরানো বা বসানো আমার এখতিয়ারের মধ্যে পড়ে না। তবে তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। আমরা প্রাপ্ত কাগজপত্র জেলা প্রশাসনে পাঠিয়েছি এ বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।