স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা:
পাবনার ঈশ্বরদীতে পদ্মানদীর চর দখল এবং বালু উত্তোলন নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এবার চাষাবাদ করতে যাওয়া আটজন কৃষককে পিটিয়ে আহত করেছে বালুদস্যুরা। শুধু তাই নয়, কৃষকদের দুটি গরু লুট করে নিয়ে গিয়ে তা জবাই করে পিকনিক করে খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২৫ মে) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের আড়মবাড়ি এলাকার পদ্মানদীর চরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই চরে কেউ গেলেই হামলার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
আহতরা হলেন—আনছার আলী মাঝি (৬৭), মজনু হোসেন (৩৫), মাছিদুল ইসলাম (৩৬), মজিদুল ইসলাম (৪০), লিটন খাঁ (৪০), সোহান, আরাফাত ও এজাজুল।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত লিটন খাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আহত কৃষকরা জানান, তারা পদ্মানদীর জেগে ওঠা নিজেদের পৈত্রিক জমি ও লিজ নেওয়া জমিতে দীর্ঘদিন ধরে আমন-বোরোসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি পদ্মায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে যুবদল নেতা সুলতান আলী বিশ্বাস টনি ও বালুদস্যু কাকনের মধ্যে গুলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে কাকনের অনুসারীরা নিরীহ কৃষকদের ওপর হামলা চালায়।
রবিবার সকালে কৃষকরা জমিতে গেলে কাকনের লোকজন তাদের বেধড়ক মারধর করে। পরে দুটি গরু নিয়ে গিয়ে জবাই করে চরে বসেই পিকনিক করে খায় বলে অভিযোগ তাদের।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সাহিদুল ইসলাম শিশির জানান,
“আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। লিটন নামের একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে লক্ষ্মীকুন্ডা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) এমরান মাহমুদ তুহিন বলেন,
“বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ এখনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত কাকনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কাকন ও তার বাহিনী দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে পদ্মার চরাঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তারা বালু মহাল দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নদীতে তাদের নিজস্ব নৌকা ও স্পিডবোট রয়েছে, এবং অস্ত্রসহ সশস্ত্র অবস্থানে থাকে। তারা রাজনীতিতে সক্রিয় না হলেও প্রতিবার ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে প্রভাব বিস্তার করে চর দখলে রাখে।