হোসাইন, নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগরে একাধিক মোহরানার নিকাহনামা তৈরি করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে কথিত কাজী বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, বিয়ের সময় এক ধরনের মোহরানার চুক্তিপত্র প্রদান করা হলেও, বিচ্ছেদের সময় অর্থের বিনিময়ে ভিন্ন মোহরানার নথি সরবরাহ করেন তিনি।
স্থানীয়রা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই কথিত কাজী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বাল্যবিবাহসহ নানাবিধ অবৈধ বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করে আসছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু পরিবার।

পশ্চিম বালুভরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম জানান, তার ভাগিনা আনিসুর রহমান ২০২৪ সালের ৭ মার্চ নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন রাণীনগরের বড়গাছা ইউনিয়নের শাহানাজ মেম্বারের মেয়ের সঙ্গে। সেই সময় কাজী বেলাল হোসাইন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মোহরানায় বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন। কিন্তু কিছুদিন পর বিচ্ছেদের সময় মেয়ে পক্ষ ৪ লাখ ২০ হাজার টাকার মোহরানাসংবলিত আরেকটি নিকাহনামা উপস্থাপন করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে বিষয়টি আদালতের দ্বারস্থ হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কাজী বেলাল হোসাইন শুধু নিজেই নন, বরং তার ভাই, পুত্র ও আত্মীয়দের দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেআইনিভাবে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিবাহ ও তালাকের কাগজপত্র প্রস্তুত করে থাকেন।
এই বিষয়ে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাজী বেলাল হোসাইন ফোন রিসিভ করেননি, ফলে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
জেলা রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “একজন কাজী তার নির্ধারিত এলাকা ছাড়া বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করার অধিকার রাখেন না। বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে আমরা একাধিক লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ভুক্তভোগীরা মনে করছেন, এ ধরণের প্রতারণা বন্ধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া উপায় নেই।