মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে এক কিলোমিটার রাস্তা খুঁড়ে বালু দেওয়ার পর কাজ ফেলে পালিয়েছে ঠিকাদার। বর্ষা মৌসুম হওয়ায় খুঁড়ে রাখা মাটি ও বালু মিশে রাস্তা চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কাজ বন্ধ করে সড়ক ফেলে রাখায় হাজার হাজার মানুষের চলাচলসহ স্কুলগামী শিশুরা পড়েছে চরম বিড়ম্বনায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৪নং ঘোড়াঘাট ইউনিয়নের ‘বানিয়াল থেকে চেচুরিয়া গ্রাম’ পর্যন্ত ১ কিলোমিটার পাকা করার জন্য রাস্তার মাঝ বরাবর মাটি কেটে রাখা হয়েছে। আট মাসের অধিক সময় ধরে কেটে রাখা অংশে ফেলা রাখা হয়েছে বালু। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পানি জমে ওই মাটি-বালু কাদায় পরিণত হয়ে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। লোকজন এর উপর দিয়ে অতি কষ্টে চলাচল করছে। উপজেলা সদরসহ হাট-বাজারে যাওয়ার একমাত্র সড়ক হওয়ায় আশপাশের নয়টি গ্রামের অন্তত ১০-১২ হাজার মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
চেচুরিয়া গ্রামের আইনুল নামে একজন বলেন, নয়টি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভর। কৃষিকাজ করে আমার আমাদের জীবিকা নির্বাহ করি। কয়েক দিন পরই ধান কাটা শুরু হবে। এই সড়ক দিয়ে খেত থেকে ধান আনা এবং হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। নয়টি গ্রামের মানুষ এই পথ দিয়ে আসা-যাওয়াসহ পণ্য আনা-নেওয়া করে। এই সড়কটি ঠিক না করলে পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। আর এজন্য আমরা ধানের ন্যায্য মূল্য পাবো না।
রায়হান নামে আরেক জন জানান, এই সড়কের মাঝামাঝি একটি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসাসহ দুটি প্রি-ক্যাডেট স্কুল আছে। রাস্তার বেহাল দশার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া ব্যাহত হচ্ছে। খরার সময় অতিরিক্ত ধুলো-বালির কারণে সর্দি-কাশি লেগেই আছে। আবার বৃষ্টিতে সড়কটি এত পিচ্ছিল হয় যে হেঁটে চলাচল করা যায় না। এ ছাড়া সর্বত্র পানি জমা হয়ে থাকছে।
ভানচালক ইয়াসিন আলী (৬৫) বলেন, ‘এই আস্তা (সড়ক) দিয়ে ভ্যান চালা যায়? গেইলেও পেছন থাকি একজন ঠ্যালা নাগে। আস্তার অবস্থা বেজায় খারাপ। তাই লোকজন ভ্যানত উঠবের চায় না। খুব কষ্টে আছি বাহে!’
এদিকে উপজেলা এলজিইডি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এক কিলোমিটার রাস্তার পাকা করার কাজ পায় বাবু ট্রেডাস নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কাজটি তারিকুল ইসলাম সাজু নামে এক ঠিকাদার কাজটি কিনে নেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্যেও তারা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বর্ধিত সময় দেওয়া হয়।
এদিকে ঠিকাদারের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দিনাজপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ঠিকাদারকে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।