মো. আব্দুল কুদ্দুস,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
সামান্য বৃষ্টিতেই সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা-গুধিবাড়ী সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় এবং সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারি দুইটি ইউনিয়নের প্রায় ১৪টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ও যানবহণ চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই খানাখন্দ ও ভাঙ্গা গর্তে পড়ে ভারি যানবহণ, অটো রিকশা-ভ্যান উল্টে প্রায়ই মানুষের হাত-পা ভাংছে।
ফলে এ জনদূর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসি সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসি জানায়, পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা বাজার থেকে গুধিবাড়ী হয়ে লোহিন্দাকান্দি গ্রাম পর্যন্ত সড়কটি পোরজনা ও কৈজুরি ইউনিয়নের প্রায় ১০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহণ করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে পোরজনা ইউনিয়নের গুধিবাড়ি, জামিরতা উত্তর ও পূর্বপাড়া, কৈজুরী ইউনিয়নের কৈজুরি, চর কৈজুরি, ভাটপাড়া, লোহিন্দাকান্দি, গুপিয়াখালি, চর গুধিবাড়ি, চিলাপাড়া, মনাকষা, জয়পুরা, পাচিল ও জাফরগঞ্জ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। সড়কটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় গত কয়েক দিনের বৃষ্টি এর বিভিন্ন সাথানে ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে বৃষ্টির পানি জমে নর্দমায় পরিণত হয়েছে। এসব গর্ত ও খানাখনের মধ্যদিয়ে চলাচলকারী অটো ভ্যান রিকশা ও পণ্যবাহী যানবহণ উল্টে প্রাং দূর্ঘটনা ঘটছে। এ সব দূর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রায়ই মানুষজনের হাত-পা ভাংছে। এছাড়া গাড়ি মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এলাকাবাসি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার ও মেরামতের জোর দাবি জানিয়েছেন।
ব্যাটারি চালিত অটোভান চালক আনিস, রাসেল, আকবর আলী ও মোবারক হোসেন বলেন, সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় মাঝে মধ্যেই ভ্যান উল্টে দূর্ঘটনা ঘটে। এতে গাড়ির ক্ষতির পাশাপাশি মানুষজনের হাত-পা ভেঙ্গে যায়। আবার মালামালেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে মানুষজন ভ্যানে উঠতে চায় না। এতে আগের চেয়ে আয় রোজগার অনেক কমে গেছে। মহাজনেক গাড়ি ভাড়া দেওয়ার পর যা বাঁচে তা দিয়ে মাছ মাংস তো দূরের কথা একদিনের চাল-ডালও কেনা যায় না। তাই ছেলে মেয়ে নিয়ে ানেক কষ্টে আছি। সড়কটি দ্রুত সারা হলে আমাদের চলাচলে আর কষ্ট থাকবে না। আয় রোজগারও বেড়ে যাবে। তখন সংসার ভালোভাবে চালাতে পারব।
চর গুধীবাড়ি গ্রামের রইচ উদ্দিন, জহুরুল ইসলাম, লহিন্দাকান্দির আলামিন হোসেন, গুধীবাড়ির রমজান আলী, মাহবুব আলম, জয়পুরার উজ্জল হোসেন, চর কৈজুরির ফরহাদ হোসেন ও গুপিয়াখালির কাবিল উদ্দিন জানান, জামিরতার বাজারে প্রতিদিন চরের শাক-সব্জি, বিভিন্ন ফল ও তরুতরকারি এবং ও সপ্তাহের দুই দিন হাট বারে ধান-চাল, পাট, গম, ভুট্টা, শরিসা, তিল সহ নানা ফসল ও হাঁস, মুরগী, কবুতর, গরু, ছাগল, ভেড়া কেনা-বেচার জন্য হাজার জাহার মানুষ আসে। এছাড়া জামিরতা বাজার, হার্ডওয়ার,মুদি দোকান, লাইব্রেরী, ওষুধ, টিভি, ফ্রিজ সহ সব ধরণের পণ্য সামগ্রী বেচা কেনা হয়। এছাড়া এখানে ওয়ার্কসপ, বেশ কয়েকটি ব্যাংক, একাধিক প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ক্লিনিক ও কোচিং সেন্টার রয়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার শিক্ষর্থী সহ হাজার হাজার মানুষ ও শত শত অটো ভ্যান, রিকশা ও পণ্যবাহী ভাড়ি ট্রাক চলাচল করে। সড়কটি বৃষ্টির পানিতে ও ধারণ ক্ষমতার অধিক পণ্য নিয়ে যানবহণ চলাচল করায় সড়কের এ বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এলাকাবাসি চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় প্রায়ই খানাখন্দে পড়ে ও কাঁদা পানি ছিটে বই, খাতা ও জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় কাঁদাপানিতে পড়ে ও ছিটে জামাকাপড় এমন ভাবে নষ্ট হয় যে আর স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় যাওয়া সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে মাঝ পথে থেকে বাড়ি ফিওে আসতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চরম ক্ষতি হচ্ছে। পরীক্ষায় ফেল করছে। তাই অতি দ্রুত সড়কটির মেরামত ও সংস্কার দরকার। আমরা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ,এইচ,এম, কামরুল হাসান রনী বলেন, বর্তমান কোনো প্রকল্প অনুমোদন নেই। প্রকল্প অনুমোদন পেলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সড়কটি মেরামত ও সংস্কার করা হবে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, পোরজনা ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসককে এ সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।