মারুফ সরকার, প্রতিবেদক:
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে জমি বিক্রির বায়নার পর শর্ত ভঙ্গ করে পুরো বসতভিটা দখলের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ঠিকাদার ফখরুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, মাত্র ৫ শতক জমি রেজিস্ট্রি করা হলেও, পুরো ২৫ শতক জমি দখল করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে খামার। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সূত্র জানায়, ঠিকাদার ফখরুল ইসলাম ব্যাংক ঋণ ও দেনা পরিশোধের উদ্দেশ্যে তার বসতভিটা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। বিদেশে অবস্থানরত অবস্থায় তার ছেলে আশরাফুল ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ২৫ শতক জমি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। সেটি দেখে সাভারের চাপাইনের ফয়েজ আহমেদ আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং জমি দেখার পর জমি ক্রয়ের জন্য বায়না সম্পাদন করেন।
বায়না অনুযায়ী প্রতি শতকে ৫ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি ২৫ লাখ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়। প্রথম ধাপে মাত্র ৫ শতক জমি ফয়েজের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হলেও তিনি পুরো টাকা পরিশোধ না করেই বসতভিটা দখলে নেন এবং সেখানে “ফরচুন এগ্রো” নামে একটি খামার স্থাপন করেন।
ফখরুলের স্ত্রী আমেনা বেগম অভিযোগ করেন, “আমরা বিশ্বাস করে ঘর ছেড়েছিলাম। কিন্তু ফয়েজ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ বা নগদ টাকা পরিশোধ করেননি। উপরন্তু, তিনি জোরপূর্বক পুরো বাড়ির দখল নিয়ে নেন।”
বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ও ফেনী মডেল থানায় একাধিকবার মীমাংসার চেষ্টা হলেও কোনো সমাধান হয়নি। অবশেষে গত ১৫ জুন রাতে এলাকাবাসীর সহায়তায় ফখরুলের পরিবার নিজ ঘর পুনরুদ্ধার করে।
ফখরুলের ছেলে আশরাফুল বলেন, “আমরা প্রতারণার শিকার হয়েছি। আমাদের বাড়িতে থাকার সুযোগ নিয়েই তারা পুরো জমি দখল করে নিয়েছিল।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফয়েজ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমরা ৫ শতক জমি রেজিস্ট্রি করেছি। ঈদের কারণে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে দেরি হয়েছে। তবে জায়গার দখল আমরা নিয়েই রেখেছি।”
অপরদিকে, ফয়েজের ছেলে ফরহাদ বলেন, “ঈদের ছুটির কারণে নির্ধারিত তারিখে টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, “ফয়েজ আহমেদ নানা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরলতার সুযোগ নিয়েছেন। কাগজপত্র দেখে আমরা নিজেরাই ফখরুল পরিবারকে ঘরে তুলেছি।”
এ প্রসঙ্গে ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুজ্জামান বলেন, “ফখরুলের কাছ থেকে বায়নার ভিত্তিতে জমি নেওয়ার পরও পুরো ২৫ শতক জায়গা দখলে রেখেছিলেন ফয়েজ। তবে তিনি বাকি টাকা ও ব্যাংক ঋণ এখনো পরিশোধ করেননি। পরিবারটি নিজ উদ্যোগে বসতভিটা পুনরুদ্ধার করেছে।”