মো. আব্দুল কুদ্দুস,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার ৯ উপজেলার বিভিন্ন হাটে এবার কোরবানির পশুর হাট বসার বেচাবিক্রিও শুরু হয়েছে এসব হাটে। তবে দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার নানা অভিযোগ রয়েছে।
জেলার শাহজাদপুর উপজেলার তালগাছি হাটে গিয়ে দেখা যায়, জমজমাট পরিবেশ। হাটে সারি সারি বাঁশের খুঁটিতে বাঁধা রয়েছে হাজারো কোরবানির পশু। গরুর দরদাম নিয়ে হাঁকডাক করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এ হাটে গরু কিনতে আসা হাফিজুর রহমান বাবলু ও মাহফুজ বলেন, আমরা যারা কোরবানি দেই প্রতি বছর ঈদের দু-তিন দিন আগে কোরবানির পশু কিনে থাকি। আজ বাজার সাভাবিক বলেন মনে হলো তাই আজই কিনলাম।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে জন্য যায়, ৯টি উপজেলায় প্রস্তুত গবাদিপশুর মধ্যে ষাঁড়, বলদ ও গাভী রয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮০০টি, ছাগল প্রায় ৪ লাখ, মহিষ ৩ হাজার ৮৭৫ এবং ভেড়া ৬৭ হাজার ৩০৩টি। জেলার কোরবানির চাহিদা প্রায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ২৪১টি। বাকি ৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৩টি পশু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হবে। এই পশুগুলো জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রি হচ্ছে। চরাঞ্চলে ঘাসের প্রাচুর্যের কারণে সেখানে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু-ছাগল পালন করায় এই এলাকার পশুর চাহিদা অন্যান্য অঞ্চলে বেশি-বলেছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
শাহজাদপুরের জামিরতা হাটে গরু কিনতে আসা উপজেলার বাতিয়ার পারা গ্রামে নাসির উদ্দিন বলেন, গত বারের তুলনায় এবার হাটে বেশি পরিমাণে দেশি জাতের গরু উঠছে। গরুগুলো দেখতেও খুব সুন্দর। তবে দাম সাভাবিক ই মনে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ সদর, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরের হাটগুলোতে আসা ব্যাপারী-ইজারাদারেরা বলেন, গতবারের তুলনায় এবার কোরবানির হাটে আসা দেশি জাতের গরুর সংখ্যা বেশি। তবে গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে ব্যয় বাড়ায় গরুর দাম আগের চেয়ে একটু বেশি।
চান্দাইকোনা হাটের ইজারাদার বলেন, গত কয়েক দিনে কোরবানির পশু এসে জড়ো হয়েছিল হাটে। ইতোমধ্যে ক্রেতাদের আনাগোনায় হাট জমে উঠেছে। রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের হাটে অন্তত দেড় হাজার গরু বিক্রি হয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিল্লাল হোসেন জানান, শুধু মাত্র সোনাতোনি ইউনিয়ন থেকে প্রায় দেড়শ কোটি টাকার ৭ হাজার ৭ শ কোরবানির পশু স্থানীয় হাট সহ ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ, কে, এম আনোয়ারুল হক বলেন, অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু যাতে হাটে ক্রয়-বিক্রয় না হয়। সে জন্য প্রত্যেক উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালিত ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম তদারকি করছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় যেসব পশুর হাটের ডাক (ইজারা) হয়নি সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ইজারা ছাড়া যদি কোথাও হাট বসানো হয় বা হাটে অনিয়মের খবর পাওয়া যায়, তবে সেটার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।