মীর ইমরান, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
পাসপোর্টধারীদের হয়রানি ও টাকা ছাড়া দেওয়া হয় না প্রিন্টিংয়ে,মাদারীপুরে পাসপোর্ট অফিসে””ছদ্মবেশে দুদকের অভিযানে এক দালাল আটক””দীর্ঘদিন থেকেই,পাসপোর্ট আটকিয়ে রেখে,টাকার বিনিময়ে প্রিন্টিং পাঠানো হতো।টাকা ছাড়া কাজ হয় না মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়েছে দুদক। অভিযানে এক দালালকে আটক করা হয়েছে।
তবে পাসপোর্ট অফিস এই অনিয়মের সাথে জড়িত থাকলেও তাদের কেউ আটক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।দীর্ঘদিন থেকেই পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক মাহমুদুল হাসান বিভিন্ন ধরেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে দুর্নীতিমূক্ত ও হয়রানিমুক্ত পাসপোর্ট অফিস চাই ও সহকারি পরিচালক মাহমুদুল হাসানের প্রত্যাহার চাই, এমন লেখা সম্বলিত ব্যানার টানিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।
এরপরও থামেনি পাসপোর্ট অফিসের হয়রানি। নির্ধারিত দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করতে গেলেই হয়রানির শিকার হতে হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ করা হয় দুদকে। পরে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে দুদকের সহকারি পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে ছদ্মবেশে মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায়।
এ সময় এমদাদ হাওলাদার নামে এক দালালকে আটক করা হয়। আটক এমদাদ হাওলাদার (৫০) সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের পাতিলাদী গ্রামের আব্দুর রফিক হাওলাদারের ছেলে। সে শহরের ইটেরপুল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকে এমন কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
দুদক জানায়, মাদারীপুর আঞ্চলিক সাপপোর্ট অফিস ও তার আশপাশে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দালালচক্র ও তাদের সহযোগী করছে পাসপোর্ট অফিস কর্মকর্তারা। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ছদ্মবেশে সেখানে অভিযান চালায় দুদক। পরে পাসপোর্ট অফিসের সামনে গোপনে কথোপকথন ভিডিও করেন কর্মকর্তারা। পাসপোর্ট করে দেবার শর্তে এক প্রত্যাশীর কাছ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা দাবি করে এমদাদ হাওলাদার। পরে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়। এরপর মুচলেকা দিয়ে স্ত্রীর জিম্মায় এমদাদকে ছেড়ে দেয় দুদক।
মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, মাদারীপুর পাসপোর্ট অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না। দালালের মাধ্যমে টাকা দিলেই কেবল সেবা পাওয়া যায়।
দালালরা পাসপোর্ট ফাইলে সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে দেয়। সেই চিহ্ন না থাকলে সেবা পাওয়া যায় না। তিনি ক্ষুব্ধ কন্ঠে আরও বলেন, শুধু দালাল ধরলেই হবে না। ধরতে হবে অফিসারদের। তাহলে কাঙ্খিত সেবা পাবে মানুষ।
দুদকের মাদারীপুরের সহকারি পরিচালক মোঃ আক্তারুজ্জামান জানান, ভবিষ্যতে পাসপোর্ট অফিস ও তার আশপাশে এমন কর্মকান্ডে লিপ্ত না থাকার শর্তে এমদাদকে তার স্ত্রীর জিম্মায় মুছলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। হয়রানী বন্ধে পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান নিয়মিত চলমান থাকবে।
মাদারীপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারি পরিচালক মাহমুদুল হাসান নিজের দায় অস্বীকার করে বলেন, পাসপোর্ট অফিসের বাইরে থেকে এক দালালকে আটক করেছে দুদকের কর্মকর্তারা। পরে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন তারা।
মীর ইমরান
জেলা প্রতিনিধি, মাদারীপুর।