শাহাদাৎ বাবু, নোয়াখালী প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে পল্লী চিকিৎসকের ছুরিকাঘাতে নিহত ছাত্রদলকর্মী আবুল হোসেন রাফি (১৯) হত্যার বিচার দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৫ মে) সকাল ও বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও শহরের প্রধান সড়কে এসব কর্মসূচি পালন করেন এলাকাবাসী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সকাল ১১টা থেকে অশ্বদিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যানার নিয়ে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেন। এ সময় রাফির পরিবারের সদস্য, স্বজন, এলাকাবাসী এবং বিএনপি-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে জেলা ছাত্রদলের ব্যানারে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থী মো. ওয়াসিম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন অশ্বদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মো. মারুফসহ বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতারা। এর আগে সকালেও নিহত রাফির বাবা আবুল কালাম আজাদ, শহর ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. ওয়াসিম ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, “ঘটনার চারদিন পার হলেও রাফির খুনি গিয়াস উদ্দিন শাহীনকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা প্রশাসনের এই ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার না করলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো এবং শহরের প্রতিটি অলিগলি অচল করে দেব।”
কী ঘটেছিল?
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুটবল খেলতে গিয়ে ঠোঁটে আঘাতপ্রাপ্ত রাফি চিকিৎসার জন্য স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীনের কাছে যান। অভিযোগ, চিকিৎসক শাহীন কোনো কারণ ছাড়াই চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানান। কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শাহীন রাফিকে ছুরিকাঘাত করেন। রক্তক্ষরণে গুরুতর আহত অবস্থায় রাফিকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
নিহত রাফি অশ্বদিয়া ইউনিয়নের অলিপুর গ্রামের মো. আজাদের ছেলে। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন শাহীন (৬০) একই এলাকার বাসিন্দা।
মামলা ও পুলিশি অবস্থান
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত শাহীন পালিয়ে যান।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পর থেকেই শাহীন পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”