হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জন্মতারিখ ভুল থাকায় ছেলে-মেয়েকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে পারছেন না জিতু মিয়া নামের এক ব্যক্তি। এনআইডিতে তার জন্মসাল উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৮৭ সালের ২ মার্চ। যার ফলে তার বয়স দাঁড়িয়েছে ১৩৮ বছর বিপরীতে, তার বাবার জন্মসাল ১৯৫০ সালের ১ মার্চ—মানে, তিনি বাবার চেয়ে ৬৩ বছর বড়!
এমন হাস্যকর তথ্য উঠে আসায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও চরম বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। এনআইডি সংশোধনের জন্য তিনি বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও সমাধান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, জিতু মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়ারভাঙা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মান্দারকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন বিদেশে থাকার পর সম্প্রতি দেশে ফিরে তার ১২ বছরের ছেলেকে স্থানীয় মাদ্রাসায় ভর্তি করাতে যান। তখনই বয়স সংক্রান্ত জটিলতা ধরা পড়ে। একই সমস্যার কারণে মেয়েকেও স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না তিনি।
ভুক্তভোগী জিতু মিয়া বলেন, “আমি লেখাপড়া জানি না। এনআইডিতে এত বড় ভুল আছে, সেটাও আগে বুঝিনি। এখন ছেলেমেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় আছি। অনেক জায়গায় ঘুরেও কিছু করতে পারছি না।”
তিনি জানান, এনআইডি সংশোধনের জন্য ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা নির্বাচন অফিস এবং আদালতে গেছেন। আজ (মঙ্গলবার) হবিগঞ্জ জেলা জজ আদালতে এফিডেভিট করে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে সংশোধনের আবেদনও করেছেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস জানান, ২০০৭ সালে সার্ভারভিত্তিক ভোটার তালিকা তৈরির সময় এই ভুলটি হয়েছে। জন্মনিবন্ধন সঠিক না থাকলে এনআইডি সংশোধন সম্ভব নয়। ভুক্তভোগীর আবেদন তারা পেয়েছেন, কিন্তু সংশ্লিষ্ট জন্মনিবন্ধন সনদেও ভুল রয়েছে বলে জানান তিনি।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, “জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স সংশোধনের জন্য বৈধ কাগজপত্র প্রয়োজন। কিন্তু ওই ব্যক্তি কোনো সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি। তাকে সিভিল সার্জনের কাছ থেকে বয়স সম্পর্কিত মেডিকেল রিপোর্ট এনে দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।”