মনির হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি :
যশোরের শার্শা উপজেলার বাগুড়ী বেলতলায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ আমের মোকামে নির্ধারিত সময়ের আগেই হিমসাগর আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড গরমের কারণে গাছে পাকা আম ঝরে পড়ায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি পরিদর্শনে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাজারে যান শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. নাজিব হাসান।
চাষিদের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন থেকে আম বাজারজাতের যে ক্যালেন্ডার নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে ২১ মে থেকে হিমসাগর আম বাজারে আনার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে বৃষ্টির অভাব ও অতিরিক্ত রোদের কারণে অনেক বাগানে আম আগেই পেকে যাচ্ছে এবং মাটিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, নিয়ম ভঙ্গ করে আগে আম তুললে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানার আশঙ্কায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এদিকে, যেসব আম ইতিমধ্যেই পেকে গেছে তা বাজারজাত করতে গেলে আড়তদাররা কিনতে চাইছেন না, কারণ তারাও জরিমানার ভয়ে রয়েছেন। এতে চাষিদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয় আমচাষি আমির হোসেন জানান,
“আমার বাগানে অনেক হিমসাগর আম ঝরে পড়ছে। অথচ প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী এখনই বাজারজাত করতে পারি না। তাই বিষয়টি দ্রুত বিবেচনায় নিয়ে সময়সীমা এগিয়ে আনা প্রয়োজন।”
চাষিদের দাবি, কিছু বাগানে পাকা আম বাজারজাতের জন্য উপজেলা কৃষি অফিসার বা উপ-সহকারী কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়ন পেলেও তা পর্যাপ্ত নয়, আর এই প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত সময় ও খরচ হচ্ছে।
কৃষি কর্মকর্তার বক্তব্য
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন,
“একটি গাছে বা বাগানে সব আম একসাথে পাকে না। যারা আমাদের কাছে এসে জানিয়েছেন, তাদের বাগান পরিদর্শন করে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে সব আম একসাথে তুলতে দেওয়া যাচ্ছে না—কারণ এতে ক্যামিকেল দিয়ে পাকানোর সুযোগ থেকে যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“যদি আম প্রকৃতপক্ষে পাকে, তবে সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে অনুমতি নিয়ে বাজারজাত করা যেতে পারে।”
কঠোর নজরদারিতে ইউএনও
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডা. নাজিব হাসান বলেন,
“আমি নিজে বাজার পরিদর্শন করেছি। নিশ্চিত করছি যেন কেউ কেমিকেল দিয়ে আম পাকাতে না পারে। কৃষকের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”