নওগাঁ প্রতিনিধি: মোঃ হাবিবুর রহমান:
নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকায় নুরজাহান নামের একটি ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে প্রায় ৯০ বিঘা জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। এতে অন্তত ৫৫ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, কালো ধোঁয়ার কারণে ধানের শীষ ঝলসে গিয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। অনেক জমির ধান সোনালি দেখালেও কাছে গিয়ে দেখা যায়, শীষে দানা হয়নি। এমনকি গাছে ফল না ধরার পাশাপাশি আম বাগানের আমও পচে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগ, তদন্তে প্রশাসন
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বিষয়টি নিয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ইউএনও শাহ আলম মিয়া জানান, কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মাঠ পরিদর্শন করে কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করবে এবং ক্ষতির কারণ নিরূপণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কৃষকদের দুর্ভোগের চিত্র
কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, “আমরা পাঁচ বছর ধরে ঘরের ধানের ভাত খেতে পারি না। এবারও সব শেষ।”
আরেক কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “প্রতি বছর ধান পুড়ে যাবে আর প্রতিশ্রুতি দিয়ে সময় কাটবে, তা হতে পারে না।”
গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী জানান, কৃষকরা প্রায় ৭৫ বিঘা ধান ও বেশ কিছু আমবাগান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগেও একই ভাটার ধোঁয়ায় ফসল নষ্ট হয়েছিল এবং তখন রাস্তা অবরোধ করে ক্ষতিপূরণ আদায় করেন কৃষকরা।
ইটভাটা মালিকের প্রতিক্রিয়া
নুরজাহান ইটভাটার মালিক মো. মিলন হোসেন বলেন, “আমাদের ধোঁয়ার কারণে ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছে কি না, তা আগে দেখতে হবে। প্রমাণ হলে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে দেব।”
কৃষি বিভাগের পর্যবেক্ষণ
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, “তীব্র গরম আবহাওয়ার সঙ্গে ইটভাটার গরম ধোঁয়ার প্রভাবে বোরো ধানক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।”