মাহফুজুর রহমান মাসুম, উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধি:
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে একটি খ্রিস্টান পল্লীতে গভীর রাতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মূল আসামিদের বাদ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পক্ষ। এ অভিযোগে পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মামলার বাদী।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টায় রাজাপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন মামলার বাদী অথরা বাড়ৈ (৩০)। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান,
“ঘটনার সময় দুর্বৃত্তরা আমার বাড়ির দরজায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। চিৎকার শুনে পালিয়ে গেলেও তারা বাড়ির পেছনের ছাগল খামারে অগ্নিসংযোগ করে এবং ১৮টি ছাগল লুট করে নিয়ে যায়। পাশাপাশি আমার পেঁপে বাগানের শতাধিক গাছ কেটে দেয়।”
তিনি আরও জানান, “ঘটনাস্থলে দুর্বৃত্তরা একটি বাটন মোবাইল ফেলে যায়। উদ্ধার হওয়া মোবাইল (নম্বর: ০১৮৬২-৯২৮৯৬০) থেকে যাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে, সেই নম্বরগুলোর ভিত্তিতে সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু পুলিশ কেবল মোবাইলের মালিককে আসামি করে মামলা গ্রহণ করেছে এবং বাকি সন্দেহভাজনদের বাদ দিয়েছে। এটি একটি আইওয়াশ মামলা।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা কনক বাড়ৈ, সাগর বাড়ৈ, নিখিল বিশ্বাস, রিবিকা বিশ্বাসসহ এলাকার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনেকে। তারা অভিযোগ করেন, মূল অভিযুক্তদের বাদ দিয়ে মামলা পরিচালনা করায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং বাদী অথরা বাড়ৈকে প্রতিপক্ষ বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জ্যোতির্ময় সাংবাদিকদের জানান, “পরে বিস্তারিত জানানো হবে।”
অথরা বাড়ৈ জানান, ঘটনার পরদিনই তিনি সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি অভিযোগ করেন, ওসি আব্দুস সালাম ও এসআই জ্যোতির্ময়ের চাপে পড়ে শুধুমাত্র মোবাইলধারী ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়।
ঘটনার দিন, সোমবার (১ জুলাই) রাত আনুমানিক ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। ঘটনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং একটি ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর হামলার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।
এ ঘটনায় বাদী জেলা পুলিশ সুপার ও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি’র কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।