সত্যজিৎ দাস (মৌলভীবাজার প্রতিনিধি):
সবুজে ঘেরা পাহাড়ি জনপদ “শ্রীমঙ্গল”, বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে এক উজ্জ্বল নাম। চা-বাগানের শোভা, পাহাড়-টিলা, জীববৈচিত্র্য ও জাতিগত সংস্কৃতির অপূর্ব সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা এ অঞ্চল শুধু ভ্রমণপিপাসুদের নয়, প্রকৃতি প্রেমিক ও গবেষকদের কাছেও সমান আকর্ষণীয়।
শ্রীমঙ্গলের পর্যটন খাতকে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব করার লক্ষ্যে এবার যুক্ত হচ্ছে আধুনিক সোলার লাইটিং ব্যবস্থা। ‘উপজেলা উন্নয়ন ও ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প’ (UDDGP)-এর আওতায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক—মহাজেরাবাদ-রাধানগর এবং নীলকণ্ঠ-কালীঘাট রোডের প্রায় ৯ কিলোমিটার জুড়ে বসানো হচ্ছে ১২৭টি সোলার স্ট্রিট লাইট। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৩ লাখ টাকা। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ,চলতি সপ্তাহেই কাজ শুরু হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রতিদিন শ্রীমঙ্গল সফর করেন শত শত দেশি-বিদেশি পর্যটক। তারা ছুটে আসেন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বাইক্কাবিল, হাইলহাওর, বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্র ও চা জাদুঘর, সাত রঙের চা খ্যাত নীলকণ্ঠ চা কেবিন কিংবা দার্জিলিং টিলার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
এছাড়াও,খাসিয়া, মনিপুরি, ত্রিপুরাসহ একাধিক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি, পোশাক, উৎসব ও জীবনধারা পর্যটকদের কাছে বাড়তি কৌতূহলের বিষয়।
শ্রীমঙ্গলে পর্যটক আসছে প্রতিদিনই,অনেকেই রাতে ঘুরতে বের হন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এবং পরিবেশবান্ধব আলোকায়নের মাধ্যমে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেই এই সোলার লাইট প্রকল্প হাতে নেওয়ায় জেলা প্রশাসককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গলের স্থানীয় নাগরিকরা।
জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন জানান, “প্রকল্পটি শুধু আলোর জন্য নয়,বরং ট্যুরিজমকে টেকসই করার একটা বড় পদক্ষেপ। পর্যটক যেন দিন-রাত নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই আধুনিক পরিকল্পনায় কাজ করা হচ্ছে।”
সোলার লাইট স্থাপনের মাধ্যমে যেমন রাতের অন্ধকারে চলাচলের নিরাপত্তা বাড়বে,তেমনি বিদ্যুৎ খরচ ছাড়াই আলোকায়নের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায়ও রাখা হবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দীর্ঘমেয়াদে এই প্রকল্প পর্যটন শিল্পে আস্থা বাড়াবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
শ্রীমঙ্গলের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে দেশের অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোর জন্যও হতে পারে অনুকরণীয় মডেল।