শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম ইউনিয়নের হাজারীহাটে সড়কের অতিরিক্ত স্পিড ব্রেকার অপসারণের দাবিতে সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) আমার স্বপ্ন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে এই কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, হাজারীহাট থেকে খিয়ারজুম্মা পর্যন্ত মাত্র ৩ কিলোমিটার ৭০০ মিটার রাস্তায় ২৯টি স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে, যার মধ্যে ২০০ মিটার রাস্তায় রয়েছে ৫টি স্পিড ব্রেকার। এই অস্বাভাবিক সংখ্যক স্পিড ব্রেকারের কারণে যান চলাচলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী পরিবহন ও জরুরি সেবায় বিঘ্ন ঘটছে।
অটোচালক মো. জাহানুর আলম বলেন, “আমরা প্রায়ই ডেলিভারি রোগী বা গুরুতর অসুস্থ রোগী অটোতে নিয়ে যাই। কিন্তু এই স্পিড ব্রেকারগুলোর কারণে তাদের অনেক কষ্ট হয়। আমি বাংলাদেশের কোথাও এত বিট (স্পিড ব্রেকার) দেখি নাই।”
অন্য একজন অটোচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা প্রতিদিন এই রাস্তায় চলাচল করি। অনেক সময় ছোট শিশু বা বৃদ্ধ যাত্রী স্পিড ব্রেকারে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। আমরা চাই দ্রুত এই স্পিড ব্রেকারগুলো সরিয়ে ফেলা হোক।”
একজন পথচারী বলেন, “এইটুকু রাস্তায় এত স্পিড ব্রেকার আমি আর কোথাও দেখিনি। এটি সাধারণ মানুষের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক।”
কাশিরাম ইউনিয়ন বিএনপি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান চৌধুরী বলেন, “আজকের এই গণস্বাক্ষর ও মানববন্ধনের মূল উদ্দেশ্য হাজারীহাট টু খিয়ারজুম্মা রোডের অতিরিক্ত স্পিড ব্রেকার অপসারণ। আমি ইউএনও সাহেবকে বলেছি এটি মিনি বিশ্বরোড। কিছু প্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার রেখে বাকিগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। আমরা জেলা প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন করবো।”
সামাজিক সংগঠন ‘আমার স্বপ্ন’-এর সভাপতি নেহারুল ইসলাম বলেন, “অপ্রয়োজনীয় স্পিড ব্রেকার অবশ্যই সরাতে হবে। তবে বাইকাররা যেন ফাঁকা রাস্তায় অতিরিক্ত গতিতে না চালায়, সে বিষয়েও সচেতন হতে হবে। আমরা চাই একটি নিরাপদ, সুশৃঙ্খল পরিবেশ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
হাজারীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. লুৎফর রহমান চৌধুরী বলেন, “৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রশাসন ব্যবস্থা না নেয়, তবে বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানাবো।”
তিনি আরও জানান, “বিগত সময়ে কাশিরাম ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস দ্রুত পৌঁছাতে পারেনি। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, রাস্তায় এত স্পিড ব্রেকার থাকায় দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হয় না।”
এই মানববন্ধনে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা, স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এনজিও ও ব্যাংক কর্মীসহ সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।