মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে ১৯৪৭ সালে ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তানে আগত মোহাজের সেনাসদস্যদের বরাদ্দ পাওয়া জমিতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের উদ্যোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই জমিতে বসবাসকারী শতাধিক পরিবার।
সোমবার (১৯ মে) দুপুর ১টার দিকে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের সামনে বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী উপস্থিত হয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ব্যারিস্টার সানি আব্দুল হক, স্থানীয় প্রতিনিধি রাজিব হোসেনসহ অনেকে। তারা অভিযোগ করেন,
“১৯৫৮ সালে তৎকালীন সরকার ঘোড়াঘাট এলাকায় আশ্রিত মোহাজের সেনাসদস্যদের প্রত্যেককে ৫ একর করে জমি বরাদ্দ দেন। তখন থেকেই আমরা বংশানুক্রমে সেই জমিতে বসবাস করে আসছি। অথচ হঠাৎ করেই কোনো প্রকার আলোচনা বা নোটিশ ছাড়াই ওসমানপুর এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে। উচ্ছেদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।”
গ্রামবাসীরা জানান, বর্তমানে শুধু মোহাজের পরিবার নয়, আশপাশের বন্যা কবলিত জেলা থেকে আসা বহু অসহায় পরিবার সেখানে বসবাস করছে। সেনা ক্যাম্প স্থাপন এবং উচ্ছেদের আশঙ্কায় তারা এখন চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন,
“আমরা এই জমি আত্মীয়দের মতো ভাগ করে নিয়েছি, জীবন গড়ে তুলেছি। এখন সেটিকে ‘ক্যাম্পের জন্য প্রয়োজন’ বলা হচ্ছে। মানবিক ও আইনি দিক বিবেচনায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চাই।”
এই অবস্থায় ওসমানপুরে সেনা ক্যাম্প স্থাপনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন,
“কেউ কোনো বিশৃঙ্খলা করবেন না। সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন হলে আপনারা আমার কাছে আসুন। আমি আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেব।”
উল্লেখ্য, ঘোড়াঘাটে জমি ইস্যুতে সেনা ক্যাম্প স্থাপনকে কেন্দ্র করে এই প্রথমবারের মতো জনমত প্রকাশ পেল জনসম্মুখে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর ভূমিকা এখন এলাকাবাসীর প্রত্যাশা।