শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী):
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পোড়াহাট থেকে রংপুরের তারাগঞ্জ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও পাকা করণের কাজ দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও শেষ হয়নি। সরকার পতনের পর জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হাজী মিজানুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স কাজ বন্ধ রেখে গা ঢাকা দিয়েছে। এ অবস্থায় ১০ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছেন দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর ধরে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের আগস্টে। কাজ অসমাপ্ত থাকায় পরে দু’দফা সময় বাড়ানো হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও ৩৫ শতাংশ কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। তবুও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৬৫ শতাংশ কাজ দেখিয়ে ১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা তুলে নেয়।
রোববার (১৮ মে) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সড়কের প্রায় ৭ কিলোমিটার অংশ এখনও কাঁচা অবস্থায় পড়ে আছে। যেসব অংশে খোয়া ও বালু ফেলে রাখা হয়েছে, সেখানেও কার্পেটিং ও রোলার না দেওয়ায় সেগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা এবং শুকনো মৌসুমে ধুলায় ভোগান্তির মাত্রা চরমে পৌঁছেছে।
জনদুর্ভোগ চরমে
স্থানীয় বাসিন্দা সুলতান হোসেন বলেন, “সাড়ে ৩ বছর ধইরা ধুলা-কাদা খাইয়া দিন যাইতাছে। রাস্তা যেই অবস্থা আছিল, তাও এর চাইতে ভালো আছিল।”
আরেক গ্রামবাসী হাসান আলী জানান, “শিশুরা স্কুলে যাইতে পারে না। রিকশা বা বাইক চলেও দুর্ঘটনার শঙ্কা।”
ঠিকাদারের খোঁজ নেই
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু জানান, “ঠিকাদারকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও তারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চুক্তি বাতিল করে নতুন দরপত্রের মাধ্যমে কাজ সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার প্রকল্পের এমন অর্ধসমাপ্ত কাজ জনমনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। প্রশাসনের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা ও দ্রুত পুনঃনিয়োগ ছাড়া এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।