ভূরুঙ্গামারী প্রতিনিধি:
উত্তর জনপদের শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাম্পার ফলনের। কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, স্বল্প খরচে অধিক ফলন হওয়ায় কৃষকরা ভালো লাভবান হবেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ইসলামপুর, পাইকেরছড়া, পাথরডুবী, সোনাহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। চারদিক সবুজ ভুট্টাক্ষেত দোল খাচ্ছে বাতাসে, ভালো ফলনের আশায় স্বপ্ন বুনছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ছিলো ১১০০ হেক্টর। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১১২৫ হেক্টর। ইতিমধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে, যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। মাত্র চার-পাঁচ বছরের ব্যবধানে ভূরুঙ্গামারীতে ভুট্টা চাষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
ইসলামপুর এলাকার চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, “আগে এই জমিগুলোতে অন্যান্য ফসল হতো, কিন্তু এখন ভুট্টা চাষ বেশি হচ্ছে। এর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম, আর বাজারেও সবসময় ভালো দাম পাওয়া যায়। তাই অনেক কৃষক এখন ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।”
পাইকেরছড়া এলাকার কৃষক বরকত জানান, “ভুট্টা চার মাসের ফসল। ডিসেম্বরের শুরুতে বীজ বপন করতে হয়। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে প্রায় ১১ হাজার টাকা খরচ হয়, যার মধ্যে বীজ বাবদ ২ হাজার, জমি চাষ, সার, সেচ ও কীটনাশক বাবদ ৬ হাজার এবং শ্রমিক খরচ ৩ হাজার টাকা। বাজারে ভালো দাম পেলে প্রতি বিঘা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব, যা অল্প সময়ে বড় লাভের সুযোগ তৈরি করে।”
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার বলেন, “গত বছরের তুলনায় এবার ভুট্টার আবাদ বেশি হয়েছে। আমরা আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। কৃষকদের স্বল্প খরচে উচ্চফলনশীল ভুট্টা উৎপাদনে সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা সর্বোচ্চ লাভবান হতে পারেন।”
উপজেলার কৃষকরা এখন বাম্পার ফলনের অপেক্ষায় আছেন। বাজার দর ভালো থাকলে এ বছর ভুট্টা চাষ থেকে তারা বেশ লাভবান হবেন বলে আশা করছেন।
মোঃ মেছবাহুল আলম
০১৭৪৮১২৯৭৪৬
০৬/০২/২০২৫