শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার টেঙ্গরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়কে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করায় স্কুলটির প্রায় হাজারো শিক্ষার্থীর নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, মাত্র ২৪ জন কলেজ পরীক্ষার্থীর জন্য বছরের একটি বড় সময় ধরে স্কুলে ক্লাস বন্ধ থাকে, যা মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য এক বড় ধাক্কা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টেঙ্গরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়টি একটি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও বিগত সরকারের শেষ সময়ে বিশেষ প্রভাব খাটিয়ে এটিকে একটি এইচএসসি কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়। এতে করে হালিমা আহসান কলেজ, ভারেরা এসপি কলেজ, বালুরচর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং বিষ্ণপুর কলেজ এই চারটি কলেজের পরীক্ষার্থীরা এখানে এইচএসসি পরীক্ষা দেয়। তবে প্রকৃতপক্ষে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ২৪ জন।
অন্যদিকে, এই স্কুলে রয়েছে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রও। ফলে বছরে দুইটি পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্র পরিচালনার কারণে প্রায় আড়াই থেকে তিন মাস শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়। চলতি বছরও এইচএসসি পরীক্ষার সময় স্কুলের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মাত্র ২০-২৫ জন কলেজ শিক্ষার্থীর জন্য হাজারো স্কুল শিক্ষার্থীর ক্লাস বন্ধ রাখা চরম অবিচার। দ্রুত কেন্দ্র বাতিল করে, মূল শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।
এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা কেন একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে? আগে এই কেন্দ্রটি শ্রীবরদী সরকারি কলেজে ছিল, যা ছিল যথাযথ ও সুবিধাজনক।
টেংগরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি শাকিল আহম্মেদ বলেন। আমাদের বিদ্যালয়টি মূলত একটি মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রতিবছর এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র থাকায় কিছুদিন ক্লাসে বিঘ্ন ঘটে, সেটা আমরা কোনোমতে সামাল দিই। কিন্তু এর পাশাপাশি এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় দুই-তিন মাসের মতো সময় শ্রেণি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হয়, যা শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিই ক্ষতিকর। মাত্র কয়েকজন কলেজ শিক্ষার্থীর জন্য আমাদের ৭০০ শিক্ষার্থী বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এটা কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। শিক্ষার্থী দের সার্থে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও শিক্ষা বোর্ডে দাবী জানানো হবে ।
প্রধান শিক্ষক ফারক আহমেদ জানান,পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমাদের স্কুলের সব শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করতে হয় তাই ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয় না। নতুন করে এইচএসসি কেন্দ্র হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মুল পাঠদান অনেক থেকে পিছিয়ে যাবে।
হালিমা আহসান টেকনিক্যাল বি.এম কলেজের অধক্ষ, মুনির আহম্মেদ বলেন, টেংগরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ে এইচ,এস,সি পরিক্ষার কোন কেন্দ্র বানানো হয়নি তবে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে যদি টেংগরপাড়া স্কুল কে এইচএসসি কেন্দ্র বানানো হয় তাহলে অন্য মানুষের কি সমস্যা।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জাবের আহম্মেদ বলেন, আমরা এখনো লিখিত অভিযোগ পাই নাই, অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।