সাইফুল ইসলাম, বাউফল প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফলের ইন্দ্রোকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইসলাম ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী জর্জ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ও আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত একটি কল রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত শিক্ষক আলতাফ হোসেন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বাউফল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য প্রধান শিক্ষক একটি আবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠান। আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন সভাপতি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তিনি আবেদন করেননি, তাই তার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এই ঘটনায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ফোনে অশালীন ভাষায় গালাগাল করেন এবং হত্যার হুমকি দেন।’ শিক্ষক আলতাফ আরও বলেন, ‘আমার অপরাধ শুধু আমি ডিসি অফিসে তালিকা জমা দিয়েছি। এর জন্য আমাকে খুনের হুমকি দেওয়া হলো! বিষয়টি আমি প্রধান শিক্ষককে জানিয়েছি এবং থানায় অভিযোগ করেছি।’
ভাইরাল হওয়া কল রেকর্ডে শোনা যায়, আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, ‘তোরে কোপাইলে কি হইবে? শালার পো শালা তোরে ধইররা কল্লাডা (মাথা) ছিইররা ফালামু। তুই বাড়ির ধারের ছোট ভাই, সেইভাবে থাক। তোরে শনিতে লাড়েচাড়ে, চাকরি করবি নাকি কেনু খাবি।’ এ ছাড়া অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘অডিও ভাইরাল হওয়া ভালো, এতে অসুবিধা নেই। সে গালমন্দ পায় দেখে তাকে গালাগাল করেছি। সে আমার ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে বিমার জন্য ৩ লাখ টাকা নিয়েছে, সেটা ফেরত দেয়নি। তাই রাগের মাথায় এসব বলেছি।’
সভাপতি নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখন সভাপতি না হতে পারলে ছয় মাস পর হবো। দল ক্ষমতায় আসলে ডিসির অনুমতিও লাগবে না। এজন্য গালাগাল করাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। মূলত টাকার বিষয়েই এই কথা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইন্দ্রোকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘শুধু আলতাফ স্যারই নন, জাহাঙ্গীর হোসেন আমাকে নিয়েও কটূক্তি করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। তবে আমরা কিছু করতে পারি না, কারণ সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নেবেন।’
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, শিক্ষক আলতাফ হোসেন থানায় জিডি করেছেন। আমরা জিডির কপি আদালতে পাঠাবো, আদালত অনুমতি দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।