জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি :
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও জাতীয়তাবাদী দল উত্তরাঞ্চল ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্বাস আলী আয়োজনে জয়পুরহাট ২ আসনের বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে দোয়া, সম্মাননা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৩ মার্চ (রোববার) বিকেলে মামুদপুর চৌমুহনী সান ফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্ডেন স্কুল প্রাঙ্গণে এ দোয়া, সম্মাননা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী রুমির সঞ্চালনায় আব্দুস সামাদ বাবুর সভাপতিত্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্কাইপিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বগুড়া ৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বগুড়া ৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হেলালিজ্জামান তালুকদার লালু বলেন, এই অনুষ্ঠানে যারা সম্মাননা পাচ্ছেন তারা বিগত সময়ে দীর্ঘ সতেরো বছর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছেন। বর্তমানে দেশ গড়ার উপযুক্ত সময়। আপনাদের সামনে অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আগামী নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, ধৈর্য ধরতে হবে। জনগণের আস্থা যদি না ফিরে আসে তাহলে আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। আল্লাহ তায়ালা যদি যান আগামীতে দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন বেগম খালেদা জিয়া ও প্রধানমন্ত্রী হবেন এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান।
ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে আব্বাস আলী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্ত পরিবেশে ইফতার মাহফিলে উপস্থিত হতে পেরে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি।
আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই ইফতার মাহফিলে যারা শরীক হয়েছেন আমি তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করছি। আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর কোনো ভাষা আমি খুঁজে পাচ্ছি না। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৪ বছর কেটে গিয়েছে, বহুবার ক্ষমতার হাত বদল হয়েছে, যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম তা আজ পূরণ হয়নি। কেন তা পূরণ হয়নি তা বিশ্লেষণের অবকাশ নেই। আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি মিলাতে পারছি না। যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে, তারাই নিজেদের ভাগ্য গড়েছে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশে অস্থিরতা চলে আসছে। জুলুম নির্যাতন কখনই বন্ধ হয়নি। জাতি অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়নি। মাগুরার ৮ বছরের একটি অবুঝ শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে তা অত্যন্ত লজ্জা ও বেদনার। আমরা তার জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দিতে পারিনি। এটা জাতির জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। রাষ্ট্র যদি মানুষকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পারে তাহলেই মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারে। আমাদের দেশে শিক্ষিত লোকের অভাব নেই। কিন্তু প্রকৃত শিক্ষার অভাব রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষার অভাবে মানুষ সত্যিকার মানুষ হতে পারছে না। দোয়া করি এ জাতিকে যেন আমরা প্রকৃত নৈতিক শিক্ষা দিতে পারি। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। সেই মেরদণ্ড যদি শক্ত না হয়, তাহলে সেই জাতি কীভাবে শক্ত হবে। এই জন্য জাতিকে নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। তা হলেই জাতি শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির শীর্ষ ৫ জন নেতাকে বিচারের নামে প্রহসন করে হত্যা করা হয়েছে। আরও ৬ জন নেতাকে কারাগারে বন্দি রেখে আবার কেও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করতে বাধ্য করেছে।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে জাতি মুক্তি পেয়েছে। জেলখানা থেকে অনেকেই মুক্তি পেয়েছে। আর যেন আইনের মারপ্যাচে কাওকে বন্দি করে রাখা না হয়। এই কামনা করি। বিগত জালেম সরকার অনেকের হাত, পা ভেঙ্গে দিয়েছে। চোখ তুলে ফেলেছে। বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি গুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আওয়ামী জাহিলিয়াত আর যেন দেশে ফিরে না আসে। আমি সম্মানের সাথে স্মরণ করছি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদেরকে। মহান রাব্বুল আলামীন নিহতদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন।
উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রফিক, আরটিভি জেলা প্রতিনিধি রাশেদুজ্জামান, একাত্তর টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম হোসেন, মাছরাঙ্গা টিভি আল মামুন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোর হারুনুর রশিদ ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হাসান হাসান আলী, আজকের সংবাদ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি এস এম মিলন, দৈনিক পাঞ্জেরী আঃ রাজ্জক, দৈনিক মানবজমিন আবু হাসান প্রমুখ।