বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার জোয়ারের মিলিত প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে জোয়ারের সময় হঠাৎ করেই পানি বেড়ে বনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে চলে যায়। এতে বিপাকে পড়ে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণিরা। শেলারচর এলাকা থেকে ভেসে যাওয়া একটি হরিণ উদ্ধার করে বনরক্ষীরা সুন্দরবনে অবমুক্ত করেছে। অন্যদিকে, দুবলারচরে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মৃত হরিণ। ধারণা করা হচ্ছে, সেটি জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ডুবে মারা গেছে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, হঠাৎ করে উঁচু ঢেউয়ে বন বিভাগের বিভিন্ন টহল ফাঁড়ি, অফিস ও ব্যারাক পানির নিচে চলে যায়। কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্টার আ. সবুর জানান, তার দায়িত্বাধীন এলাকায় কটকার বনাঞ্চল ৪ থেকে ৫ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়, তবে প্রাণীহানির ঘটনা ঘটেনি। হরিণগুলো আশেপাশের উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়, বিশেষ করে বন বিভাগের পুকুরপাড় বা উঁচু বাঁধে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রানা দেব বলেন, জোয়ারের পানির তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বনকর্মীদের চলাচলও ব্যাহত হয়। বাগেরহাট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করীম চৌধুরী বলেন, জলোচ্ছ্বাসে মৃত হরিণের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং এজন্য বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুরো এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালাতে।

সুন্দরবনের এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগে জীববৈচিত্র্যের ওপর যে প্রভাব পড়েছে, তা মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বন বিভাগও জোরদার নজরদারি চালাচ্ছে, যাতে প্রাণীদের জীবন রক্ষা করা যায় এবং ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র নিরূপণ করা সম্ভব হয়।