জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
মোঃ হাবিবুর রহমান
নওগাঁ জেলার বিভিন্ন বাজারে উঠতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন জনপ্রিয় রসালো ফল লিচু। তবে বাজারে উঠলেও এসব লিচু পরিপক্ব নয়—আকারে ছোট, স্বাদে কম এবং দামেও বেশ চড়া। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু ঠিকমতো পরিপক্ব হওয়ার আগেই গাছে ঝরে পড়ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আগেভাগেই লিচু বাজারে ছাড়ছেন বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
আত্রাই উপজেলার আহসানগঞ্জ রেলস্টেশন বাজার, সাহেবগঞ্জ, ভবানীপুর, মির্জাপুর ও বান্দাইখাড়া বাজারসহ জেলার নানা বাজারে এখন দেশি জাতের অপরিপক্ব লিচু বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ১০০ পিস লিচু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আকারে ছোট ও অর্ধপাকা হওয়ায় ভোক্তারা আশানুরূপ স্বাদ পাচ্ছেন না, ফলে বাজারেও নেই বিশেষ ভিড়।
ক্রেতারা বলছেন, শিশুদের জন্য লিচু কিনতে এসেও তারা হতাশ হচ্ছেন। বাঁকাপুর গ্রামের বাসিন্দা কাজল রানা বলেন, “ছেলে-মেয়েরা লিচু খেতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু বাজারে এসে দেখি লিচু আধাপাকা, আকারে ছোট এবং স্বাদেও কম। তবুও দাম বেশি।”
এদিকে চলতি মৌসুমে তীব্র গরম ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচু গাছে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, “সুমিষ্ট লিচুর জন্য আদর্শ তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু টানা কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। এতে গুটি ঝরে পড়েছে, ফলন কমেছে, এবং লিচুর আকার ছোট হয়েছে। তবে প্রচণ্ড রোদের কারণে কিছু লিচু বেশি মিষ্টি হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে যেসব লিচু বাজারে এসেছে, তা পরিপক্ব নয়। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কয়েকদিন অপেক্ষা করে লিচু বাজারজাত করার জন্য, যাতে গুণগত মান ঠিক থাকে।”
লিচু ব্যবসায়ী জোসেফ আলী জানান, “আর কয়েক দিনের মধ্যেই রাজশাহী, পাবনা ও দিনাজপুরের পরিপক্ব লিচু বাজারে আসবে। তখন চাহিদা ও বিক্রিও বাড়বে।” তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জাতের মধ্যে বেদানা, বোম্বাই, মাদ্রাজি ও চায়না থ্রি লিচু এখনও বাজারে আসেনি। এর মধ্যে চায়না থ্রি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
ভোক্তারা আশাবাদী, আর কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে রসালো, পরিপক্ব ও স্বাদযুক্ত লিচু পাওয়া যাবে, যা তাদের মৌসুমি ফলের তৃষ্ণা মেটাবে।