শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দার (৬০) কাউন্সিলরকে আটক করেছে পুলিশ। নিজে নেতৃত্ব দিয়ে উপজেলায় অবস্থানকারী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের সংগঠিত করে সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার গোপন মিটিং করাকালে তিনি আটক হয়েছেন।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) জুমআর নামাজের পর সৈয়দপুর শহরের কাজীপাড়া হঠাৎবস্তি সংলগ্ন রেলওয়ের ভাগার এলাকায় পুকুর পাড়ে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দারের পরিবারের দাবি নিছক পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখান থেকে তাকে ভূয়া অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
আটক কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দার সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি কাজীপাড়া এলাকার মৃত কাজী ওমর আলীর ছেলে এবং সৈয়দপুর পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর। তাঁকে জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে গুলি করে শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে নীলফামারী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, ওই এলাকায় একটি পুকুর পাড়ে পিকনিকের নামে আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দার গোপনে মিটিং করছিলেন। এখবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশের একটা দল অভিযান চালায়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মিটিংয়ে যোগদানকারী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা যে যার মত পালিয়ে যায়। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে হায়দার কাজীও পালানোর সময় রাস্তার পাশের ডোবায় পড়ে গেলে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান।
পুলিশের অভিযানে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিনের নেতৃত্বে অংশ নেন সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক নয়ন কুমার, থানার উপ পরিদর্শক আমিনুর রহমান, সোহরাব হোসেন, মেহেদি হাসান মারুফ, আব্দুল হামিদ, সুভাষ রায়সহ সঙ্গীয় ফোর্সরা।
তবে মনোয়ার হোসেন হায়দারের পরিবারের দাবি ওই এলাকায় পুকুর লীজ নেওয়া উপলক্ষে পরিবার ও আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিলো না।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন জানান, পিকনিকের নামে আওয়ামী লীগ নেতা কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দার নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ করেছিলেন এবং সরকার বিরোধী ও নাশকতামুলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিকল্পনা করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতেই তাকে আটক করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর দায়েরকৃত ৪ নং মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী।
তিনি বলেন, ছাত্র জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর করা ওই মামলায় হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে কাজী মনোয়ার হোসেন হায়দারকে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাস ও নাশকতা আইনে দায়ের করা মামলার আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।