আতাউর রহমান কাওছার, ওসমানীনগর(সিলেট)থেকে:
সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা ভাগের প্রায় ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও ২টি মৌজার কয়েক হাজার মানুষ ভূমি সেবা পেতে এখনও যেতে হয় বালাগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। এতে দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি হচ্ছে দুই মৌজার জনসাধারণের। জমির খাজনাসহ বিভিন্ন সেবা কুরুয়া ক্যাম্প অফিস সহযোগিতা করলেও প্রশাসনিক কাজ করতে হয় সুলতানপুর ইউনিয়ন তহসিল অফিস থেকে। এতে মৌজাগুলোর মানুষ ভূমি সেবাগুলো নিজ উপজেলা অফিসে সম্পন্ন করতে না পেয়ে পড়েছেন বিড়ম্বনায়। দয়ামীর ইউনিয়নের কুরুয়া এলাকার প্রবাসীরা পূর্ণাঙ্গ ইউনিয়ন ভূমি অফিস স্থাপনের জন্য ৮শতক জায়গাও দান করেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের জানালেও এর সুফল হয় নি।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২ জুন বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮টি ইউনিয়নের ১৪৬টি মৌজা ও তিনটি তহসিল অফিস নিয়ে ওসমানীনগর উপজেলায় উন্নীতকরণ করা হয়। এর পূর্বে ওসমানীনগর থানা থাকলেও উপজেলার কার্যক্রম চলতো বালাগঞ্জ থেকে। বিভিন্ন সময়ে বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থানান্তর হলেও ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের খাগদিওর ও হুসেন নমকি মৌজার ভূমি সেবা কুরুয়া ক্যাম্প অফিসের মাধ্যমে বালাগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস বাস্তবায়ন করে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে অন্যান্য মৌজার ভূমি সেবার কাজ ওসমানীনগরে স্থানান্তর হয়ে আসলেও এই দুই মৌজার কার্যক্রম অজানা কারণে রয়ে যায় বালাগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের আওতায়। স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্টদের জানালেও দীর্ঘদিনেও বাস্তবায়ন হয়নি। এতে কয়েক হাজার মানুষ দুই উপজেলার প্রশাসনিক জটিলনায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। গত ২৫ মে ভূমি মেলা উপলক্ষে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় ভোগান্তির এ বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। বক্তারা সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে দুই মৌজাকে স্থানান্তর করে কুরুয়া এলাকায় নিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।
সুলতানপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিস (কুরুয়া ক্যাম্প অফিস) এর উপ-সহকারী কর্মকর্তা আফতাব উদ্দিন জানান, কুরুয়া ভূমি অফিস স্থাপন করার জন্য প্রবাসীরা ৮শতক জায়গা দিয়েছেন। মৌজাগুলো ভাগ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।
সুলতানপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার নারায়ন চন্দ্র রায় জানান, দীর্ঘদিন পুর্বে মানুষের সুবিধার জন্য ভূমির খাজনা দিতে কুরুয়া ভূমি ক্যাম্প অফিস করা হয়েছিল। তবে ইউনিয়ন ভিত্তিক ভূমি সেবা হলে মানুষের সুবিধা হবে। মৌজাগুলো ভাগ করার জন্য সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
দয়ামীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ভূমির কাজ নিয়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এই দুইটি মৌজার ভূমির যাবতীয় কার্যক্রম কুরুয়া এলাকায় নিয়ে আসলে মানুষের দূর্ভোগ লাঘব হবে। বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেও এর কোনো সুফল আসে নি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, এ ধরণের জটিলতা নিরসনের জন্য দুই মৌজার ভূমির সেবা দ্রুত ওসমানীনগরে স্থানান্তরের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য ভূমি সেবা সহজ করতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি।