স্টাফ রিপোর্টার:
টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষা ও সুরক্ষার দাবিতে ঢাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকাস্থ হাওর অঞ্চলবাসী।
বুধবার (১৮ জুন ২০২৫) সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এই মানববন্ধনে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষায় ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন তারা।
বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর একটি বিশেষ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা, যা ‘রামসার সাইট’ হিসেবেও স্বীকৃত। একসময় যেখানে হাজার হাজার জলচর পাখি ও মাছের স্বাভাবিক বিচরণ ছিল, সেখানে বর্তমানে চলছে পরিবেশবিধ্বংসী পর্যটন কর্মকাণ্ড।
তারা অভিযোগ করেন, হাওরে প্রায় ২০০ হাউসবোটে যত্রতত্র পর্যটক অবস্থান, উচ্চ শব্দে গান-বাজনা, প্লাস্টিক ও মানববর্জ্য ফেলে পানি দূষণ—এসব কারণে মাছ মারা যাচ্ছে, পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। ২০১৮ সালের পাখি জরিপ অনুযায়ী হাওরে ৬০ হাজার জলচর পাখি থাকলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ২৩ হাজারে।
মানববন্ধনে ঘোষিত ৬ দফা দাবি হলো:
১. হাউসবোটের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও অনুমতিপত্রে নির্ধারিত শর্ত মানা।
২. পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পলিথিন, প্লাস্টিক ও বোতল সংগ্রহ ও নিষ্পত্তি।
৩. সরকার-প্রণীত পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনা নীতিমালা দ্রুত প্রকাশ ও বাস্তবায়ন।
৪. জেলা প্রশাসকের সহায়তায় সুষ্ঠু মানববর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
৫. শব্দ, আলো, ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে জলজ প্রাণী রক্ষা।
৬. জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং ও পরিবেশগত তদারকি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন হাওর অঞ্চলবাসীর প্রধান সমন্বয়ক ড. হালিম দাদ খান।
বক্তব্য রাখেন:
সাবেক অতিরিক্ত সচিব ডা. সৈয়দ উমর খৈয়াম, ড. গোলাম শফিক, হাওর উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন, হাওর অঞ্চলবাসীর সমন্বয়ক জাকিয়া শিশির, সদস্য জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা, বোরহান উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী, প্রাণী ও প্রকৃতি রক্ষা ফাউন্ডেশনের ইবনুল সাঈদ রানা, ঢাকা জেলা সদস্য সচিব কামরুল হাসান ও সাংবাদিক নেতা শেখ মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মেনন চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, “টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষা করা শুধু হাওরবাসীর দায়িত্ব নয়, এটি সমগ্র জাতির পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার দায়িত্ব। এখনই উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শুধু একটি বিপর্যস্ত নিসর্গই দেখতে পাবে।”