অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষ্মীপুরের হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইন (৮) হত্যার প্রতিবাদে ও মামলার দ্বিতীয় আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বশির আহমেদসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী।
রবিবার (১ জুন) দুপুরে শহরের উত্তর তেমুহনীস্থ আল মুঈন ইসলামি একাডেমির সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গোলচত্বর হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে মানববন্ধনে রূপ নেয়। পরে পুনরায় মাদ্রাসার সামনে গিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং কাঁচভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় আলেম মাওলানা নুরনবী, খালেদ মাহমুদ, ইকবাল মাহমুদ, নিহত সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির মাতাব্বর ও মা জয়নব বিবি।
পুরনো ইতিহাসেও ভয়াবহ অভিযোগ
স্থানীয়দের দাবি, এটি এ মাদ্রাসায় ছাত্র মৃত্যুর প্রথম ঘটনা নয়। এর আগেও আরও দুই শিশুকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এক শিশুকে চুলার উপর গরম ডালের হাঁড়িতে ফেলে হত্যার অভিযোগ রয়েছে, আরেকজন পানিতে সাঁতার শেখাতে নিয়ে ডুবিয়ে ফেলে চলে আসে শিক্ষকরা। এছাড়াও নির্যাতন, বলাৎকার, ও বিভিন্ন অভিযোগে এর আগে একাধিকবার জরিমানাও গুনতে হয়েছে শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটিকে।
সানিমের মৃত্যু ও মামলা
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মে সন্ধ্যায় উত্তর তেমুহনী এলাকার ওই মাদ্রাসা থেকে সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে দুপুরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সানিমের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে। তবে নিহতের পরিবার বলছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তাদের দাবি, “তৃতীয় তলা থেকে আত্মহত্যা” বললেও মরদেহ নিচতলার একটি কক্ষে পাওয়া যায়, এবং সিসিটিভি ফুটেজে কোনো স্থানান্তরের দৃশ্য নেই।
ঘটনার রাতে নিহতের বাবা হুমায়ুন কবির মাতাব্বর সদর থানায় অধ্যক্ষ বশির আহমেদ, শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মাহমুদ ও ফয়সালসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মাহমুদকে ঘটনার দিনই গ্রেপ্তার করলেও অধ্যক্ষ বশির ও শিক্ষক ফয়সাল এখনও পলাতক।
অভিভাবকের আহাজারি
সানিমের বাবা বলেন, “আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করেনি। একাধিকবার পিটিয়েছে, দয়া করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করুন।”
অধ্যক্ষের বক্তব্য মেলেনি
ঘটনার বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও অধ্যক্ষ বশির আহমেদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।