শাহজাহান আলী মনন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পিডাব্লিউ (উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী – পথ) শাখার স্টোর (গুদাম) থেকে গ্যাস দিয়ে কেটে দুই পিক-আপ রেললাইন পাচার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ভোরে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
সূত্র জানায়, রেললাইনগুলো গ্যাস দিয়ে টুকরো করে কাটার পর সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি রেল প্রশাসনকে জানানো হলেও সময়মতো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পাচারকৃত মালামাল দ্রুত স্থানান্তর করা হয়।
রেলওয়ে নীতিমালা অনুযায়ী, ইয়ার্ড বা স্টোরে গ্যাস ব্যবহার করে রেললাইন কাটার অনুমতি নেই। অত্যাবশ্যক পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ব্লেড দিয়ে কাটা যেতে পারে। শুধুমাত্র ট্রাফিক লাইনের মেরামতকালে অনুমতিসাপেক্ষে গ্যাস ব্যবহার করা যায়।
তবে অভিযোগ রয়েছে, এসব নিয়মকে উপেক্ষা করে বহিরাগত সহযোগীদের সহায়তায় স্টোর ইনচার্জ সুলতান মৃধা রাতভর গ্যাস দিয়ে রেললাইন কাটেন এবং সকালে পিক-আপে লোড করে পাচার করেন।
ঘটনার পর সকাল ১০টার দিকে সংবাদকর্মী ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা স্টোর খুলে সেখানে সদ্য কাটা রেললাইনের টুকরো, গ্যাস সিলিন্ডার ও কাটার সরঞ্জাম দেখতে পান।
আরএনবি সদস্যরা প্রশ্ন করলে ইনচার্জ সুলতান মৃধা বলেন, “কাজের সুবিধার্থে গ্যাস দিয়ে কাটা হয়েছে, যদিও নিয়ম নেই। তবে অনুমতি নিয়েছি। পাচারের অভিযোগ সত্য নয়।” এরপর এক বহিরাগত যুবক সোহাগকে ডেকে এনে উত্তেজিত আচরণ করেন তিনি।
বিষয়টি জানতে চাইলে পার্বতীপুরের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “স্টোরে গ্যাস ব্যবহার করা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমি কিছুই জানি না, দায়িত্ব ইনচার্জের।”
রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, “এই ইনচার্জের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে, কিন্তু প্রমাণের অভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছি না। হাতেনাতে ধরিয়ে দিলে উপকৃত হবো।”
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ট্রাক) আহসান জাবির বলেন, “তথ্য-প্রমাণ থাকলে নিউজ করুন। তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”