জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি ৩-৩-২৫
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় যেন অফিস নয়, একেবারে আবাসিক হোটেল। এখানে থাকা-খাওয়ার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা।তবে এই সুযোগের আড়ালে চলমান নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, রান্নায় নিয়োজিত। অফিসের মধ্যেই রয়েছে রাইস কুকার, গ্যাস সিলিন্ডার ইনডাকশন গ্যাসের চুলা এবং প্রয়োজনীয় রান্নার সামগ্রী। পাশের কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে বিছানা, চেয়ার এবং আলমারির মতো জিনিসপত্র। অফিস কক্ষেই দীর্ঘদিন ধরে এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার এমন আয়োজন চলে আসছে বলে জানা যায়
ঘটনার সূত্রে ২ মার্চ বড়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার প্রতিকার চেয়ে সাংবাদিকদের অভিযোগ করায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তন্দ্রা সরকার।
বড়াইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মাহবুর রহমান তার কর্মস্থলের অধীনস্থ স্থানীয় মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশীদ এর দ্বারা বিভিন্ন সময় মানষিক, শারীরিক, ভয়ভীতি ও হুমকি-ধামকির স্বীকার হয়ে প্রতিকার চেয়ে (২ মার্চ) রবিবার সকালে ক্ষেতলাল প্রেসক্লাবে এসে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, আমি গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বরে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগদান করি। এরপর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বড়াইল ইউনিয়ন পরিষদে সমন্বয় মিটিংয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান বাবু’র মাধ্যমে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংস্কারের জন্য একটি বরাদ্দ আসে। মাটি ভরাটের বিস্তারিত বিষয়ে চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে ওই কেন্দ্রের মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশিদ আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি ও কয়েক দফায় আমাকে মারতে আসে। এপর্যায়ে পরিবার নিয়ে কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি উর্ধতনকে ঘটনাটি জানালে তারা থানায় অভিযোগ করতে বলেছে।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লায়লা আঞ্জুমান্দ বা মেডিক্যাল অফিসার ডা. তন্দ্রা সরকার কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে, অফিসের একটি কক্ষে রান্নার হারি পাতিল, গ্যাস সিলেন্ডার অপর আরেকটি কক্ষে সরকারি হাসপাতালের রোগীদের পরিত্যক্ত বেড রাখা হয়েছে এবং পুরো অফিসকে বানানো হয়েছে কিচেন রুম।
এবিষয়ে মাঠ পরিদর্শক মামুনুর রশীদকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর তার মা রাজীয়া সাংবাদিকদের ফোন দিয়ে বলেন, কোন কিছু যাচায় না করে আমার ছেলের বিরুদ্ধে কোন সাংবাদিক নিউজ করে সেই সাংবাদিককে দেখে নিব।
অভিযোগ পেয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে গিয়ে বক্তব্য চাইতে গেলে পরিবার পরিকল্পনা সহকারী মনোয়ার হোসেন বলেন, মামুন ও মাহবুর রহমান দু’জনেরই মাথার সমস্যা আছে। এবিষয়ে আমাদের উর্ধতন অফিসারদের সাথে কথা বলুন।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ডা. তন্দ্রা সরকার বলেন, আমাদের মৌখিক বা লিখিতভাবে না জানিয়ে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মাহবুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এতে তিনি চাকুরী বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এই অপরাধে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।