সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় এডাবের আয়োজনে সম-নাগরিকত্ব শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) সকালে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে এডাবের জেলা কমিটির সভাপতি মাধব চন্দ্র দত্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম-নাগরিকত্ব শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আজিজুল হক।
এসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ এডাব’র সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো.আনিছুর রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন,শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মো.আব্দুল হামিদ,অধ্যাপক মোজাম্মেল হক,সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.আব্বাস আলী,অধ্যক্ষ আশেক ই এলাহী, সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান, শরিফুল্লাহ কায়সার সুমন,আমিনা বিসকিস ময়না,বাংলাদেশ জাসদের অধ্যাপক ইদ্রিস আলী,জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলীনুর খান বাবুল, বাংলাদেশ মহিলা সংস্থার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জোৎস্না দত্ত,নারী সংগঠক চন্দ্রিমা ব্যানার্জী, ক্রিসেন্টের আবু জাফর সিদ্দিক,জেলা দলিত পরিষদের সভাপতি গৌরপদ দাস,সিডোর শ্যামল কুমার বিশ্বাস,মুক্তি ফাউন্ডেশনের গোবিন্দ ঘোষ,সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সানজিদা খাতুন প্রমুখ।
সেমিনারের শুরুতে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে কী নোট উপস্থাপন করেন উষা এনজিও-র নির্বাহী পরিচালক মো.সামসুজ্জোহা।
সেমিনারে বক্তারা বলেন,
সম-নাগরিকত্ব হল প্রতিটা নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার,নাগরিক অধিকার রক্ষায় সচেতন,নাগরিক অধিকার রক্ষায় সকল ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ,নাগরিক অধিকার প্রাপ্তিতে সকল নাগরিকের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা সহ সকল নাগরিকের সমমর্যাদা ও নিরাপত্তা সমুন্নত রাখা।সম-নাগরিকত্ব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারী, বেসরকারী বিভিন্ন মহলকে কার্যক্রম গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা,
সম-নাগরিকত্ব ধর্ম, লিঙ্গ, জাতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, জন্মস্থান, বাসস্থান, ইত্যাদি নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল নাগরিক কে মানুষ হিসেবে দেখা, সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়া ও সমান নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করবার অবস্থা নিশ্চিত করাই হলো সম-নাগরিকত্ব।
বাংলাদেশে সম-নাগরিকত্বের বর্তমান অবস্থা
সাংবিধানিক অধিকার বলতে আমরা সে সব অধিকারকে বুঝি যা কোনো দেশের সংবিধানে লিপিবদ্ধ বাস্থবায়নের ব্যাপারে সাংবিধানিক নিশ্চয়তা দেয়া হয়। জন্মগতভাবে মানুষের সহজাত অধিকার সাংবিধানিক স্বীকৃতির মাধ্যমে মানবাধিকার গুলিই মৌলিক অধিকার হিসাবে গণ্য হয়।রাষ্ট্র নাগরিকদের ব্যক্তিত্ত বিকাশের জন্যই মৌলিক অধিকার নামক অপরিহার্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের সকল নাগরিকের সমানাধিকার এর কথা ঘোষনা করা হয়েছে, অন্যদিকে এসডিজি বা টেকসই উন্নয়নঅভীষ্ট’র মূলকথাও “কাউকে বাদ দিয়ে নয়”। বাংলাদেশে সংবিধান ও আইনগতভাবে দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার স্বীকৃত থাকলেও বাস্তবে অনেক নাগরিকের সমান অধিকারই সমান থেকে বঞ্চিত।
সম-অধিকার থেকে বঞ্চিতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
নারী,হতদরিদ্র,জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠি,ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্টি, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি,দুর্গম অঞ্চলের মানুষ,তৃতীয় লিঙ্গ (হিজরা)
দলিত সমাজ।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে,
বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় আমাদের সামনে রয়েছে ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০২০-২০২৫)।দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা।২০৩০ এর মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)অর্জন।২০৪১ এর মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে পৌছানো।
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশ এ তিনটির ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়ন নাগরিকদের সার্বজনীন আকাঙ্ক্ষা। এসকল আকাঙ্খার সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি-প্রাইভেট সেক্টর সকলের সম্মিলিত প্রয়াস। এসডিজি’র লক্ষ্য ১৬ তে আমরা যে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ব্যবস্থার কথা বলেছি তা সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার বিষয়টিকেই প্রতিনিধিত্ব করে। সংবিধানে প্রদত্ত অধিকার সমূহ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই আমাদের জাতীয় আকাঙ্খা অর্জন হতে পারে এবং দেশও কাংখিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে।
এস এম হাবিবুল হাসান